টেলরকেও ফিক্সিংয়ে জড়াতে চেয়েছিলেন এক ভারতীয় ব্যবসায়ী 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ব্রেন্ডন টেলর। তাও আবার গত বছরের সেপ্টেম্বরে। এতদিন পর জানা গেলো, সাকিবের মতো ফিক্সিংয়ের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন সাবেক জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। দুর্নীতির প্রস্তাব আইসিসিকে জানাতে দেরি করায় এখন তার শাস্তি আসন্ন। টেলর নিজেই বিবৃতিতে জানিয়েছেন, খুব সম্ভব অনেকগুলো বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন তিনি। 

ঘটনাটি ছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরের। এক ভারতীয় ব্যবসায়ী নতুন টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের কথা বলে তাকে ভারতে আমন্ত্রণ জানান। সেজন্য ১৫ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয় তাকে।

ঘটনাটা ঘটে এমন এক সময় যখন নাকি জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডে তুমুল আর্থিক সংকট। টেলররাও বেতন পাচ্ছিলেন না অনেকদিন। ভারত অবস্থানকালে সেই সময়ের কথা বলে টুইটারে বিশাল বিবৃতিতে টেলর জানিয়েছেন, ‘ওই ব্যবসায়ী ও তার সহকর্মীরা আমাকে নৈশভোজে নিয়ে যায়। সেখানে আমরা পান করছিলাম, ওরা আমাকে কোকেন সেবনেরও প্রস্তাব দেয়। যেটাতে ওরা আগে থেকে সম্পৃক্ত ছিল। আমি বোকার মতো কোকেন সেবনে ওদের সঙ্গে যোগ দিই।’

এই কোকেন সেবনের ঘটনাই পরে দুর্ভোগ তৈরি করে টেলরের জীবনে। কোকেন সেবনের ভিডিওটি গোপন ধারণ করে রাখা হয় শুধুমাত্র তাকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য। টেলর বলেছেন, ‘পরের দিন সকালে ওরা আমার হোটেল রুমে হানা দেয়। আগের রাতের কোকেন সেবনের ভিডিও দেখিয়ে বলে, আমি যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্পট ফিক্সিং না করি তাহলে ভিডিওটি ফাঁস হয়ে যাবে।’

এই ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার সময় টেলরকে বলা হয় ১৫ হাজার ডলার তার কাছে ডিপোজিট হিসেবে থাকবে। পরে কাজ করে দিলে আরও ২০ হাজার ডলার দেওয়া হবে। টেলর শুধুমাত্র নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই অর্থ নিয়ে নেন, ‘আমাকে ১৫ হাজার ডলার দেওয়া হয়। বলা হয় স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য এই অর্থটা ডিপোজিট। পরে কাজ করে দিলে আরও ২০ হাজার ডলার দেওয়া হবে। আমি ওই সময় অর্থটা নিয়ে নেই এই কারণে যাতে আমি নিরাপদে ভারত ছাড়তে পারি। তখন মনে হয়েছে- না বলে ফেলা এই সময়ের জন্য কোনও বিকল্প নয়। শুধু মাথায় ছিল আমাকে এখান থেকে বের হতে হবে।’

আইসিসিকে ওই ঘটনা জানানোর ক্ষেত্রে ৪ মাস বিলম্ব হয়েছে টেলরের। তার পরেও শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন তিনি। তবে টেলর পরিষ্কার করে বলেছেন, ‘পরিষ্কার করে বলতে চাই আমি কোনও ধরনের ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিলাম না। অনেক কিছু করে থাকতে পারি, কিন্তু প্রতারক নই। আইসিসি আমাকে কয়েক বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। আমি বিনীতভাবে এই সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিচ্ছি।’

পাশাপাশি টেলর আরও জানিয়েছেন, তিনি মাদকাসক্ত। যার চিকিৎসার জন্য একটি পুনর্বাসন সেন্টারে ভর্তি হচ্ছেন কাল মঙ্গলবার।