আপনারা হয়তো প্রতি ম্যাচে দুইশ আশা করেন: মুমিনুল

আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে এসে সেঞ্চুরি খরা কেটেছে মুমিনুল হকের। সাদা পোশাকে ২৬ ইনিংস পর তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়েছেন। যার সর্বশেষ টেস্ট সেঞ্চুরিটি ছিল (১২৭) ২০২১ সালে পাল্লেকেলেতে। অথচ এত লম্বা বিরতির পরও সাবেক অধিনায়ক মনে করেন, তিনি রানের বাইরে ছিলেন না।

শুক্রবার তৃতীয় দিনের খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসেন মুমিনুল। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয় দীর্ঘ দিন রান না পাওয়ায় এই ইনিংসটা কতটুকু স্বস্তির? জবাবটা একটু বাঁকাভাবেই দিয়েছেন তিনি, ‘আপনি যদি শেষ চার ইনিংস দেখেন, রান অত খারাপ না। আপনারা হয়তো প্রতি ম্যাচে দুইশ আশা করেন, সেজন্য আপনাদের কাছে মনে হয় রানে নেই। হ্যাঁ, আক্ষেপ ছিল যখন লম্বা ইনিংস ব্যাটিং করতে পারিনি, যেটা আমার অভ্যাস। আলহামদুলিল্লাহ করতে পেরেছি, দলের কাজে দিয়েছে।’

একটা সময় টেস্টে ব্যাটিংয়ে নামলেই সেঞ্চুরি করতেন। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে দুই ইনিংসেও সেঞ্চুরির কীর্তি ছিল তার। দুই ইনিংসে না পারলেও এক ইনিংসে তো সেঞ্চুরি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু কিছু সময় পর হাফসেঞ্চুরিও করতে পারছিলেন না ‘লিটল মাস্টার’ খ্যাত মুমিনুল।

আজকের ইনিংসের আগে আগের ২৬ ইনিংসে তার হাফ সেঞ্চুরি ছিল কেবল দুটি। বাকি ইনিংসগুলোর বেশিরভাগই সিঙ্গেল ডিজিটের। শুক্রবার মিরপুরে অবশেষে মমিনুলের ব্যাটে এলো স্বস্তির সেঞ্চুরি। তবে এই ব্যাটার টেস্ট খেলেন লম্বা সময় পর পর। তাতে ধারাবাহিকতায় কোন প্রভাব ফেলছে কিনা এমন প্রশ্নে মুমিনুল বলেছেন, ‘এই জিনিসটা আমার কাছে মনে হয় আপনাদের বেশি কনসার্ন হওয়া উচিত। কারণ একটা খেলোয়াড় যখন রানে থাকে না, আপনারা ওইভাবে বিচার করেন না। একটা খেলোয়াড় চার মাস পর টেস্ট খেলছে, ওকে একটু সুযোগ বা ওইভাবে বিবেচনা করা উচিত। ওই সুযোগটা আপনারা দেন না। চার মাস পরে খেলুক বা এক বছর পরে! একদিক দিয়ে এটা আমার জন্য পজিটিভ, লম্বা সময় থাকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। আপনি যেটা বলছেন, আমি নেগেটিভ ভাবে নেই না। আসলে আমি আমার মানসিক অবস্থানটা ওভাবেই করে ফেলেছি।’

টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি তুলে মুমিনুলের পাশে বসেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সাবেক অধিনায়ক কাছ থেকে শান্তর নান্দনিক এই ইনিংসের উদযাপন দেখেছেন। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুমিনুল হকও দুই ইনিংসে ১৭৬ ও ১০৫ রান করেছিলেন। এবার তার একক কৃতিত্বে শান্ত ভাগ বসিয়েছেন। আগের ম্যাচে ১৪৬ রানে থামা শান্ত শুক্রবার থেমেছেন ১২৪ রানে। শান্তকে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করতে দেখে নিজের অনুভূতি এভাবেই জানান মুমিনুল, ‘আমরা দলের সবাই চাচ্ছিলাম দুইটা ১০০ হোক। আমার কাছে মনে হয় দ্বিতীয় ইনিংসের চেয়েও প্রথম ইনিংসের ১০০ মূল্যবান, কারণ ওটাতে খেলাটার মোমেন্টামটা চেঞ্জ হয়ে যায়। এজন্য আমরা সবাই চাচ্ছিলাম ১০০ হোক। আলহামদুলিল্লাহ ওকে ধন্যবাদ, টিমের জন্য দুইটা ১০০ করে অবদান রাখার জন্য। এটা বিরাট ব্যাপার।’

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে ৪ উইকেটে ৪২৫ রানে। ততক্ষণে ১২১ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল। ইনিংস ঘোষণার আগে তখনকার পরিকল্পনা নিয়েও জানান বামহাতি ব্যাটার, ‘আসলে ওইরকম কোনও লক্ষ্য ছিল না। ক্যাপ্টেন যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাই। আমরা শুধু লম্বা সময় ব্যাটিং করতে চেয়েছিলাম।’