লিটন দাসকে নিয়ে কম ট্রল হয়নি। তার রানকে ডিসকাউন্ট হিসেবে ধরে নানা রকম প্রচার করা হয়েছে নিয়মিত। সেই লিটন কঠিন সময় পেছনে ফেলে তরতর করে এগিয়ে গেছেন। গত বছর আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারে দ্বিতীয় রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। লিটনের মতো নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়েও ট্রল কম হয়নি। নিয়মিত ব্যর্থ হওয়ার পর শান্তকে ‘লর্ড’ উপাধি দেওয়া হয়। শান্ত এখন সত্যিই লর্ড হয়ে গেছেন, ২২ গজের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে রেকর্ডবুকে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন তিনি। বাঁহাতি এই ব্যাটারের জায়গাতে একটা সময় ছিলেন লিটনও, ফলে শান্তর অনুভূতি খুব ভালো করেই বোঝেন তিনি।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে সব বিভাগেই দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে টপ অর্ডার ব্যাটার শান্তর দাপট দেখানো ব্যাটিং বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসিয়ে দিয়েছে। প্রথম ম্যাচে ১৪৬ রানের পর দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেন ১২৪ রানের ইনিংস। শান্তর বদলে যাওয়ার পেছনে কী ভূমিকা রেখেছে এমন প্রশ্নে লিটন বলেছেন, ‘দেখেন শান্তর জায়গায় আমিও ছিলাম কিছুদিন আগে। এসব নিয়ে শান্তর সঙ্গে আমার কথাবার্তাও হয়েছে। জানি না কতটুকু তাকে সাহায্য করেছে। তার হয়তো অনুশীলনের মেথড একটু বদলে গেছে। আগে যেভাবে অনুশীলন করতো এখন অনেক গোছানো।’
লিটন আরও বলেছেন, ‘আপনি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে থাকবেন নিয়মিত, আপনি কিন্তু জানবেন আপনার ঘাটতি কী। কোন জায়গায় আপনি শক্তিশালী, কোন জায়গায় আপনি দুর্বল। সে তার জিনিসটা খুব ভালোভাবে খুঁজে পেয়েছে। ওভাবেই অনুশীলন করেছে। এটা ভালো দিক। আমি চাইবো ও যেভাবে খেলছে এটা যেন ধরে রাখে। খারাপ সময় আসবে-যাবে। ও যদি ধরে রাখতে পারে, কীভাবে সফল হয়েছে মনে রাখে, তাহলে সাফল্য পাবে।’
শান্তর জোড়া সেঞ্চুরি ছাড়াও জাকির দারুণ ছাপ রেখেছেন। প্রথম ইনিংসে মাহমুদুল হাসান জয় প্রতিরোধ গড়েছিলেন। অপেক্ষাকৃত তরুণ টপ অর্ডার ভালো পারফর্ম করাটা লিটনের কাছে স্বস্তির, ‘আপনি যদি বড় দল হতে চান। পাঁচদিনের ক্রিকেট খেলতে চান (টপ অর্ডারের পারফরম্যান্স জরুরি)।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টপ অর্ডার পারফরম্যান্স করেছে বলেই সাফল্য এসেছে বলে মনে করেন লিটন, ‘হ্যাঁ আমাদের ব্যাটিং আগে নড়বড়ে ছিল। টেস্টে যদি টপ অর্ডার পারফর্ম না করে তাহলে খুব কঠিন ফিরে আসা। এদিক দিয়ে আমরা খুশি যে ব্যাটাররা পারফর্ম করছে। এটা ভালো দিক যে আমাদের ব্যাটাররা ক্যারেক্টার শো করছে। জাকির কেবল তৃতীয় টেস্ট খেলেছে। কখনই মনে হয়নি কেবল তৃতীয় টেস্ট খেলছে। ওর ভেতরে পরিপক্বতা এসেছে, একই কথা জয়ের বেলাতেও। জয় নিউজিল্যান্ডেও গেলো। ওই যে ক্যারেক্টার শো করছে, আমরা চাই এরকম ক্যারেক্টার শো করবে। ডিটারমিনেশন অনেক হাই থাকবে যে দেশকে অনেক কিছু দিতে পারবো। জাকির রান আউট না হলে আরও বড় ইনিংস খেলতে পারতো। যেভাবে সে খেলেছে আমি খুশি।’
ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ইনজুরিতে পড়েছিলেন জাকির হাসান। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ মিস করলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ফিরেছেন। প্রথম ইনিংসে ১ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭১ রানের ইনিংস ছিল। উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকার দারুণ ক্ষমতা আছে জাকিরের। মূলত ৭৫ এর বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাই তাকে ভালো করতে সহায়তা করছে, ‘অবশ্যই। আমার মনে হয় জাকির ৬০ এর বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছে (টেস্ট অভিষেকের আগে)। যত বেশি চার দিনের ম্যাচ খেলবেন আইডিয়া বেশি হবে। যদিও কদিন আগে অভিষেক হয়েছে। কিন্তু চারদিনের ম্যাচ হেল্প করেছে।’