৯৯ রানে বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজ শ্রীলঙ্কার

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ৩৯.৪ ওভারে ১৮৬/১০ (মোস্তাফিজ ০*, তানজিদ ১৭, শান্ত ০, ইমন ২৮, মিরাজ ২৮, শামীম ১২, হৃদয় ৫১, তানজিম ৫, তাসকিন ১, জাকের ২৭, তানভীর ৮)

শ্রীলঙ্কা ৫০ ওভারে ২৮৫/৭ (চামিরা ১০*, হাসারাঙ্গা ১৯*; মাদুশকা ১, নিসাঙ্কা ৩৫, কামিন্দু ১৬, আসালাঙ্কা ৫৮, লিয়ানাগে ১২, কুশল ১২৪, ভেল্লালাগে ৬)

ফল: শ্রীলঙ্কা ৯৯ রানে জয়ী।

সিরিজ: ২-১ এ জয়ী শ্রীলঙ্কা।

পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশ তিন বিভাগেই খারাপ খেললো। শ্রীলঙ্কাকে ডেথ ওভারে চেপে ধরলেও ২৮৬ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড়ায় তাদের সামনে। ৩ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান ছিল তাদের। তারপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে সেই লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে থাকতে শেষ হয় তাদের ইনিংস। দুইশও করতে পারেনি বাংলাদেশ। হার মেনেছে ৯৯ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজ শ্রীলঙ্কা জিতেছে ২-১ এ।

দুষ্মন্ত চামিরা ও আসিথা ফার্নান্ডোর দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে তাওহীদ হৃদয় ৫১ রান করে সফল। এছাড়া ইমন ২৮ ও জাকের ২৭ রান করেন। ৩৯.৪ ওভারে ১৮৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

চামিরা ও আসিথা তিনটি করে উইকেট নেন। দুটি করে পান ওয়ানিন্দ হাসারাঙ্গা ও দুনিথ ভেল্লালাগে।

এর আগে কুশল মেন্ডিসের ১২৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান করে শ্রীলঙ্কা।

জাকের আউট

জাকের আলী মারমুখী ছিলেন। ২ চার ও ১ ছয়ে ৩৫ বলে ২৭ রান করে বোল্ড হন তিনিও। ৩৮.৫ ওভারে ১৮২ রানে ৯ উইকেট পড়েছে।

তানজিম-তাসকিন আউট

৩৪.৪ ওভারে ১৬২ রানে সাত উইকেট হারালো বাংলাদেশ। তানজিম হাসান সাকিব ৫ রানে দুষ্মন্ত চামিরার শিকার হলেন।

আর ৯ রান করতেই তাসকিন আহমেদ বোল্ড হন। ১৭১ রানে ৮ উইকেট নেই।

ফিফটি করে আউট হৃদয়

৩১তম ওভারের শেষ বলে চার মেরে ৭৬ বলে ফিফটি করেন তাওহীদ হৃদয়। আর এক বল টিকলেন তিনি। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হলেন বাংলাদেশি ব্যাটার। দুষ্মন্ত চামিরার বলে তার ৭৮ বলে ৩ চার ও এক ছয়ের ইনিংস শেষ হয়। ১৫৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

শামীম প্যাভিলিয়নে

২৭.১ ওভারে ১২৪ রানে ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। শামীম হোসেন পাটোয়ারী ক্রিজের বাইরে থাকতে কুশল মেন্ডিস তাকে স্টাম্পিং করেন। ১২ বলে ১৮ রান করেন শামীম।

বল স্টাম্প ভাঙার সময় কুশলের গ্লাভসে ছিল কি না তা নিশ্চিত করতে সময় লেগেছে থার্ড আম্পায়ারের।

২৮ রানে মিরাজের বিদায়

চতুর্থ উইকেট হারিয়ে ২১তম ওভার শেষ করেছে বাংলাদেশ। দলীয় ১০৫ রানে মেহেদী হাসান মিরাজ জানিথ লিয়ানাগের ক্যাচ হলেন। 

দুনিথ ভেল্লালাগের বলে তার ২৫ বলে চার ৪ ও এক ছয়ে ২৮ রানের ইনিংস থামলো।

মিরাজের ছক্কায় বাংলাদেশের ১০০

১৯.২ ওভারে বাংলাদেশ একশতে পৌঁছে গেলো। মেহেদী হাসান মিরাজ ছক্কা মেরে দলকে তিন অঙ্কের ঘরে নেন।

ইমন আউট

১৩.৩ ওভারে ৬২ রানে তিন উইকেট হারালো বাংলাদেশ। দুনিথ ভেল্লালাগের বলে আউট পারভেজ হোসেন ইমন। তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৪০ রানের।

৪৪ বলে চারটি চারে ২৮ রানে আউট নিশান মাদুশকার ক্যাচ হন ইমন।

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ৫৫ রান

১৯ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভাঙন। আর এক রান যোগ করতেই নেই দ্বিতীয় উইকেট। বাংলাদেশের জন্য বাজে শুরু। তবে পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদযের সতর্ক ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে আর কোনও উইকেট না হারিয়ে ৫৫ রান করেছে বাংলাদেশ। ২৬ রানে ইমন ও ৭ রানে হৃদয় অপরাজিত আছেন।

বাংলাদেশের হাফ সেঞ্চুরি

নবম ওভারের পঞ্চম বলে পারভেজ হেসেন ইমনের তিন রানে বাংলাদেশ পঞ্চাশ ছুঁলো। ২৪ রানে অপরাজিত তিনি। ৬ রানে খেলছেন তাওহীদ হৃদয়।

বোল্ড হয়ে শান্তর ডাক

ওপেনিং জুটি ভাঙার চার বল পর নাজমুল হোসেন শান্ত প্যাভিলিয়নে। ৩ বল খেলে ডাক মারলেন তিনি। দুষ্মন্ত চামিরার বল তার অফস্টাম্পের উপরের দিকে আঘাত করে। ২০ রানে ২ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কার রিভিউ নষ্টের পর তানজিদ বোল্ড

তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে তানজিদ হাসান তামিমের বিরুদ্ধে এলডব্লিউর আপিল করে শ্রীলঙ্কা। আম্পায়ার তা নাকচ করে দিলে রিভিউ নেয় তারা। কিন্তু আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। তবে পরের বলে আসিথ ফার্নান্ডো স্টাম্প ভাঙেন। ১৯ রানের ওপেনিং জুটিতে ১৭ রান করে মাঠ ছাড়েন তানজিদ।

সিরিজ জিততে বাংলাদেশের চাই ২৮৬ রান

কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কার ১২৪ রানের জুটিতে শ্রীলঙ্কা এই সিরিজের সর্বোচ্চ রান করেছে। পাল্লেকেল্লেতে শেষ ওয়ানডেতে ৭ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ ২৮৫ রান। সিরিজ জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৮৬ রান।

আসালাঙ্কা ৫৮ রানে ফেরার পর ছোট ধসের সামনে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সর্বোচ্চ ১২৪ রান করেন কুশল।

বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মিরাজ।

শ্রীলঙ্কার সপ্তম উইকেটের পতন

৪৬.৫ ওভারে ২৫৯ রানে ৭ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা। তাসকিন আহমেদের বলে শামীম হোসেনের দুর্দান্ত ক্যাচ হলেন দুনিথ ভেল্লালাগে।

চারিথা আসালাঙ্কার বিদায়ে ১২৪ রানের জুটি ভাঙার পর আর ৩৫ রানে আরও তিন উইকেট পড়েছে শ্রীলঙ্কার।

১২৪ রানে আউট কুশল

কুশল মেন্ডিসের দুর্দান্ত ইনিংসের সমাপ্তি হলো শামীম হাসানের বলে। ১১৪ বলে ১৮ চারে ১২৪ রান করে বাংলাদেশের বোলারকে ফিরতি ক্যাচ দেন তিনি। ৪৫.৪ ওভারে ২৫৬ রানে ৬ উইকেট পড়লো শ্রীলঙ্কার।

হিট উইকেটে লিয়ানাগের বিদায়

৪৫তম ওভারের শেষ বলে হিট উইকেট হলেন জানিথ লিয়ানাগে। ২৪৯ রানে পাঁচ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা। 

১২৪ রানের জুটি ভাঙলেন তাসকিন

৪১তম ওভারের তৃতীয় বলে চারিথ আসালাঙ্কাকে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ বানালেন তাসকিন আহমেদ। কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ১১৭ বলে তার ১২৪ রানের জুটি ছিল। ৫৮ রান করেন তিনি। ২২৪ রানে ৪ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা।

কুশলের সেঞ্চুরি, আসালাঙ্কার ফিফটি

৩১তম ওভার থেকে মারমুখী কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কা। এই জুটি ১০০ রান পার করেছে।

আসালাঙ্কা ৩৮তম ওভারের চতুর্থ বলে ১৬তম হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৬০ বলে ৮ চারে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি। একই ওভারের শেষ বলে সেঞ্চুরি করেন কুশল। ৯৫ বলে ষষ্ঠ শতক তার।

মিরাজের আঘাতের পর কুশলের ফিফটি

কামিন্দু মেন্ডিসের আউটের পর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৫তম ফিফটির দেখা পেয়েছেন কুশল মেন্ডিস। তার ব্যাটেই লঙ্কানদের স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ হচ্ছে। কুশল ফিফটির দেখা পেয়েছেন ৫৮ বলে। 

শ্রীলঙ্কার স্কোর একশ ছাড়ানোর পর মিরাজের আঘাত

নিসাঙ্কার সঙ্গে ৫৬ রানের জুটি ভাঙার পর আবার জুটি গড়েছিলেন কুশল। কামিন্দুকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ রান যোগ করেছিলেন। এই জুটিতেই ২১তম ওভারে স্কোর একশ ছাড়িয়েছে। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি এই জুটি। ২১তম ওভারের শেষ বলে কামিন্দু মেন্ডিসকে (১৬) এলবিডাব্লিউতে বিদায় দিয়েছন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কামিন্দুর ২০ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার।   

নিসাঙ্কাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন তানভীর

চতুর্থ  ওভারে প্রথম উইকেট হারানোর পর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ডে রান তুলছিলেন ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। জুটি গড়ে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারা। ১৪.৪ ওভারে ৫৬ রানের সেই জুটি ভেঙেছেন বামহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। ওপেনার নিসাঙ্কা সুইপে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন। তাতে টপ এজ হয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ইমনের হাতে তালুবন্দি হন ৩৫ রানে। নিসাঙ্কার ৪৭ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার।   

পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কার ৫১

টস জিতে শুরুতে ব্যাট নেওয়ার পর চতুর্থ ওভারে উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তবে অপরপ্রান্তে পাথুম নিসাঙ্কা ছিলেন অবিচল। পরে নতুন নামা কুশল মেন্ডিসও আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে যোগ দিলে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারেই ৫১ রান তুলে ফেলে স্বাগতিক দল। 

শুরুর সাফল্য এনে দেন তানজিম।চতুর্থ ওভারে তানজিমের আঘাত

শুরু থেকে ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও খোলসবন্দি ছিলেন নিশান মাদুশকা। শুরু থেকে অস্বস্তি নিয়ে খেলছিলেন। চতুর্থ ওভারের শুরুতেই তানজিম সাকিবের শিকারে পরিণত হন তিনি। তানজিমের গতিময় বাউন্সি বলটি ঠিকমতো খেলতে পারেননি মাদুশকা। স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দেন ১ রানে।  

শেষ ওয়ানডেতে টস হেরেছে বাংলাদেশ

দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে বাংলাদেশ। এবার লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের মিশন বাংলাদেশের। অবশ্য শেষ ম্যাচে টস ভাগ্য পাশে পায়নি তারা। পাল্লেকেলেতে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। 

লঙ্কানদের বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে দুটি (২০২১ ও ২০২৪) সিরিজ জয়ের ইতিহাস থাকলেও শ্রীলঙ্কার মাটিতে সেই সুযোগ হয়নি। আজ মঙ্গলবার সেই বিরল সুযোগ তাদের সামনে, জিতলেই মেহেদী হাসান মিরাজদের গড়া হবে নতুন কীর্তি। 

একাদশে কারা

বাংলাদেশ একাদশে পরিবর্তন একটি। পেসার হাসান মাহমুদের জায়গায় ফিরেছেন পেসারতাসকিন আহমেদ। নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে সংশয় থাকলেও ফিটনেস টেস্ট উতরে গেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা অবশ্য অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে। 

বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, নাজমুল হোসেন শান্ত, শামীম হোসেন, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলী, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, তানভীর ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: নিশান মাদুশকা, পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), জানিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ভেল্লালাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহিশ থিকশানা, দুষ্মন্ত চামিরা ও আসিথা ফার্নান্ডো।