শ্রীলঙ্কায় ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের  

বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা ঘরের মাঠে আবারও অজেয় থাকলো। এর আগে শ্রীলঙ্কায় সাতটি দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ খেললেও একটিও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে বৃষ্টির কারণে তিন ম্যাচের সিরিজ ড্র হয়েছে দুইবার। কলম্বোয় আগের ম্যাচে প্রথমবার ওয়ানডে জিতে পাল্লেকেলেতে ইতিহাস গড়ার সুবর্ণ সুযোগ ছিল মেহেদী হাসান মিরাজদের সামনে। তবে লঙ্কান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সে স্বপ্নও ভেঙে চুরমার। 

সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৯৯ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ফলে সিরিজ হারতে হলো ২-১ ব্যবধানে। এই হারে লঙ্কায় প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো।

টসে জিতে শুরুতে বড় স্কোর গড়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেও ডেথ ওভারে তাসকিন আহমেদ-মেহেদী হাসান মিরাজরা চেপে ধরে লঙ্কানদের। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমেছে ২৮৫ রানে। ২৮৬ রানের কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ খেই হারিয়ে পাওয়ার প্লেতেই। তানজিদ হাসান তামিম (১৭) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (০) ফেরার পর রানের পাহাড়ে চড়াটা শুরুতেই কঠিন হয়ে পড়ে। এরপর যদিও তাওহীদ হৃদয় পারভেজ হোসেন ইমন ও মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে যথাক্রমে ৪২ ও ৪৩ রানের দুটি জুটি গড়েন। এই জুটি ভাঙার পরই মূলত খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। 

টানা তিন ম্যাচেই নির্ধারিত ওভারের আগে অলআউট হতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। দ্বিতীয় ম্যাচে জিতলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথম ও শেষ ম্যাচ হারতে হলো। ব্যাটারদের অবস্থা এতটাই নাজুক যে, ৩৯.৫ ওভারে অলআউট হতে হয়েছে। 

দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে দায়িত্ব দিয়েও ব্যাটিংয়ে উন্নতির কোনও ছাপ নেই। বরং তার নিয়োগের পর থেকেই ব্যাটিং লাইনআপে দুর্বলতার ছাপ আরও প্রকট। এক ম্যাচে ভালো, পরের কয়েকটিতে ধস- এই ধারাবাহিকতায় তৈরি হচ্ছে ব্যর্থতার দীর্ঘ তালিকা। সর্বশেষ উদাহরণ মঙ্গলবারের ম্যাচ, যেখানে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১৮৬ রানে। ব্যাটারদের মধ্যে শুধু হৃদয় একাই লড়ে করেছেন সর্বোচ্চ ৫১ রান। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা দলের এমন ভেঙে পড়া অবস্থা এখন রীতিমতো হতাশাজনক।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরু পায় শ্রীলঙ্কা। আগের দুই ওয়ানডের মতো আজও ডেথ ওভারে দারুণভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশের বোলাররা। শুরুতে বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমেছে ২৮৫ রানে। ৪৬.৫ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিল ২৪১ রান, তখনও চোখে ৩০০ ছুঁয়ে ফেলার স্বপ্ন। কিন্তু শেষ ৪১ বলে মাত্র ৪৪ রান তুলেই লঙ্কানরা হারিয়ে ফেলে বাকি ৪ উইকেট। তবে লঙ্কানদের স্কোরকে এতদূরে নিয়ে আসার পেছনে মূল কৃতিত্ব কুশল মেন্ডিসের। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ১১৪ বলে ১৮ চারে ১২৪ রান করেন উইকেট কিপার এই ব্যাটার। 

কুশলের আউটের পরই মূলত চেপে ধরে বাংলাদেশ। ডেথ ওভারে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছেন তাসকিন ও মিরাজ। দুজনই নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। পাশাপাশি তানভীর ইসলাম, শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও তানজিম হাসান সাকিবের বোলিংয়ে ছিল নিয়ন্ত্রণ ও কার্যকারিতা।