‘হ্যাটট্রিকম্যান’ রাসেলের যত স্বপ্ন

হ্যাটট্রিক করে সিলেটের সেমিফাইনাল জয়ের নায়ক রাসেল আহমেদছোটবেলা থেকে ফুটবলের প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ রাসেল আহমেদের। সিলেট টেকনিক্যাল স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়া এই তরুণ ফুটবলারের স্বপ্ন জাতীয় দলে খেলা। জাতীয় যুব গেমসের সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিক করে সিলেটকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়া রাসেল সেই স্বপ্ন বুকে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন।

বয়সভিত্তিক ফুটবলে কয়েক বছর ধরেই তার দারুণ পারফরম্যান্স। গত বছর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সারা দেশ থেকে বাছাই করা ৬৫ জন ফুটবলারের মধ্যে তিনিও ছিলেন। কিন্তু ইনজুরির কারণে কাতার ও নেপালে খেলতে যেতে পারেননি। বাংলা ট্রিবিউনকে আক্ষেপ নিয়ে রাসেল বললেন, ‘গোপালগঞ্জে অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দলের ক্যাম্পে সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু ইনজুরির কারণে গত বছর কাতার ও নেপালে যেতে পারিনি। খুব হতাশ হয়েছিলাম তখন।’

রবিবার ঢাকার বিপক্ষে সেমিফাইনালের অতিরিক্ত সময়ে হ্যাটট্রিক করে তিনি এখন প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা।  টুর্নামেন্টে পাঁচ গোল করা সিলেটের তরুণ ফুটবলার নিজের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত, ‘হ্যাটট্রিকের অনুভূতি অন্যরকম। দলের সবাই আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বাড়ি থেকে সবাই ফোনে কথা বলেছে, বাবা খুব খুশি। আজ অন্যরকম একটা দিন কাটালাম।’

দলকে ফাইনালে তুলেও তিনি দারুণ খুশি, ‘আমরা ২০১৫ সাল থেকে একসঙ্গে অনুশীলন করছি। বয়সভিত্তিক ফুটবলে দুইবার সেমিফাইনালে খেলেছি। এবারই প্রথম ফাইনালে উঠলাম, যেখানে আমার বড় অবদান। তাই খুব ভালো লাগছে।’

অথচ অভাবের কারণে একসময় ফুটবল খেলা বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছিল ২০০২ সালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বড়ইকান্দিতে জন্ম নেওয়া রাসেলের। চরম দুঃসময় এগিয়ে আসা বন্ধু-বান্ধব এবং শিক্ষকদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ, ‘বন্ধুরা সাহায্য না করলে আমি ফুটবলার হতে পারতাম না। এলাকার বড় ভাই আর স্যাররাও আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন।’

রাসেলের স্বপ্নের সীমানা অনেক বড়, ‘আমি জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখি, দেশের জন্য অনেক কিছু করতে চাই। বড়দের সঙ্গে বড় ক্লাবে খেলারও স্বপ্ন দেখি। আমি চাই, সবাই যেন আমাকে ফুটবলার রাসেল নামে চেনে। আমি মেসিকে খুব পছন্দ করি। জানি মেসির মতো ‍ফুটবলার হতে পারবো না, তবু তার মতো হওয়ার স্বপ্ন দেখি।’ সিলেট রেডিওতে চাকরি করা বাবার স্বপ্নও পূরণ করতে চান তিনি, ‘ফুটবলার হতে বাবা আমাকে অনুপ্রাণিত করছেন। আগে একটু বকা-ঝকা করলেও এখন তার স্বপ্ন ছেলে বড় ফুটবলার হবে।’