সেভিয়ার বিপক্ষে জয়খরা কাটিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা

বার্সার তৃতীয় গোল করে সুয়ারেসের উদযাপনঅবশেষে লা লিগায় জয়ের দেখা পেল বার্সেলোনা। এজন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের চার ম্যাচ। শনিবার ন্যু ক্যাম্পে ৪-২ গোলে সেভিয়াকে হারিয়ে লিগের শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

তিন ড্র ও এক হারে আগের ম্যাচে সেভিয়ার কাছে এক নম্বর আসন হারায় বার্সা। এবার তাদের হারিয়ে সেটা পুনরুদ্ধার করেছে এর্নেস্তো ভালভারদের শিষ্যরা। ৯ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে কাতালান জায়ান্টরা। দেপোর্তিভো আলাভেস (১৭) এক পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে দুই নম্বরে।

মাত্র ২ মিনিটে সেভিয়ার রক্ষণ ভেঙে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। সেমেদো বক্সের মধ্যে বল বাড়িয়ে দেন লিওনেল মেসিকে। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড প্রতিপক্ষের রক্ষণ ফাঁকি দিয়ে বল পাঠান ফিলিপ্পে কৌতিনিয়োর কাছে। গোলরক্ষক থোমাস ভাকলিককে কোনও সুযোগ না দিয়ে জালে বল জড়ান ব্রাজিলিয়ান তারকা।

৬ মিনিটে সেভিয়ার সুযোগ নষ্ট হওয়া ছিল দুর্ভাগ্যজনক। গিলেরমো আরানা বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি গোলপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়ালে। সেভিয়াকে আরও পেছনে ফেলে বার্সা ১২ মিনিটে। লুই সুয়ারেসের লম্বা পাস থেকে বল পায়ে নিয়ে ডান প্রান্ত থেকে জায়গা তৈরি করে বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি।

দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে দুই গোলে এগিয়ে দেওয়ার পর চোটে পড়েন মেসি। বার্সা অধিনায়ককে মাঠ ছাড়তে হয় বাধ্য হয়ে। তার জায়গায় মাঠে নামেন উসমান দেম্বেলে।

এই চোটে মেসিকে মাঠের বাইরে যেতে হয়েছে (ছবি: রয়টার্স)মেসিকে হারানোর ধাক্কা বার্সার গায়ে লাগলেও দৃঢ়তার সঙ্গে খেলে গেছে বাকি সময়। ৩৬ মিনিটে কৌতিনিয়োর বাঁকানো শট গোলবারের খানিকটা উপর দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েও দুর্বল শটের কারণে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি বার্সার মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচ।

বিরতির পর ৫৪ ও ৫৮ মিনিটে আর্থার ও সুয়ারেসের শট গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যাওয়ায় বার্সার তৃতীয় গোলের দারুণ দুটি সুযোগ নষ্ট হয়। অবশ্য ৬৩ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি থেকে স্কোর ঠিকই ৩-০ করেন সুয়ারেস।

প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ভাকলিক বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে সুয়ারেসকে ফাউল করেন। তাতে স্পট কিক থেকে বার্সার তৃতীয় গোল করেন উরুগুয়ান স্ট্রাইকার। ৬৯ মিনিটে রাকিতিচের বাঁ পায়ের শট গোলবারের উপর দিয়ে যায়। চার মিনিট পর কৌতিনিয়োর ফ্রি কিক থেকে অনেক উঁচুতে লাফিয়ে হেড নেন লংলে, কিন্তু বল চলে যায় গোলপোস্টের পাশ দিয়ে। পরের মিনিটে সুয়ারেসের শট ঠাণ্ডা মাথায় রুখে দেন ভাকলিক।

৭৯ মিনিটে বানেগার পাসে বক্সের প্রান্ত থেকে বার্সাকে এক গোল শোধ দেন পাবলো সারাবিয়া। ম্যাচ শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যেতে পারতো সেভিয়া। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় দুটি সেভে স্বাগতিকদের রক্ষা করেন টের স্টেগেন। বার্সার উন্মুক্ত রক্ষণভাগের সুযোগ নিয়ে সারাবিয়া ১৫ গজ দূর থেকে শট নেন লক্ষ্যে। জার্মান গোলরক্ষক এক হাতে সেটা প্রতিহত করেন। ফিরতি শট নেন লুইস মুরিয়েল, এবার পুরো শরীর দিয়ে তাকে ব্যর্থ করেন টের স্টেগেন।

সারাবিয়া ৮৭ মিনিটে বার্সার জালে আরেকবার বল জড়ান। কিন্তু রেফারি সেটা বাতিল করে দেন সেভিয়া মিডফিল্ডার হাত দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ করায়। অতিথিদের ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে ৮৮ মিনিটে দুর্দান্ত গোল করেন রাকিতিচ।

৪-১ গোলে পিছিয়ে পড়া সেভিয়া দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান কমায়। বেন ইয়েডারের অ্যাসিস্টে মুরিয়েল করেন ৪-২।