২০১৭ সালের মাঝামাঝি জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পেয়েছিলেন অ্যান্ড্রু ওর্ড। বছর খানেক বাংলাদেশে ছিলেন এই অস্ট্রেলিয়ান। ওর্ড এসেই ফুটবলারদের ফিটনেসের ওপরে সবচেয়ে জোর দিয়েছিলেন। তার উত্তরসূরী জেমি ডে ধরে রেখেছেন সেই ধারাবাহিকতা।
ইদানীং ম্যাচের ৯০ মিনিট সমান তালে দৌড়াতে দেখা যাচ্ছে ফুটবলারদের। জিমে কঠোর পরিশ্রমই তার অন্যতম কারণ। পাশাপাশি খাদ্যাভাসে পরিবর্তনও ফিট করে তুলছে খেলোয়াড়দের। আগে ভাত ছাড়া চলতোই না অনেকের। অথচ এখন ফুটবলারদের খাদ্য তালিকায় আছে পাস্তা, ওটস আর শাক-সব্জি। জাতীয় দলের ক্যাম্প চলার সময় শর্করা জাতীয় খাবার বলতে গেলে বাদই যায়। শরীরের ওজনও রাখতে হয় নিয়ন্ত্রণে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে কয়েক দিন আগে গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোকে ৫০ ডলার জরিমানা পর্যন্ত দিতে হয়েছে!
দেশের সেরা গোলকিপার আরও জানালেন, ‘আগে আমরা অনেক কিছুই বুঝতাম না। কোন খাবারে ফ্যাট বেশি থাকে, কোন খাবার খেলে ফিট থাকা যায় সে সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। তবে অ্যান্ড্রু ওর্ড আসার অনেক কিছু বুঝতে পেরেছি। আর জেমি ডে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের জীবন-যাপনে পরিবর্তন এসেছে। নতুন জীবনধারার সঙ্গে আমরা মানিয়েও নিয়েছি।’
জাতীয় দলের ফুটবলারদের শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন-যাপন দেখে অন্যরাও সচেতন হয়ে উঠছে। রানা বললেন, ‘জাতীয় দলে জায়গা পেতে হলে কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হয়। আমাদের দেখে ক্লাব ফুটবলাররা শিখছে, ফিটনেস নিয়ে সচেতন হয়ে উঠছে। ক্লাবগুলোর খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আসছে। এটা দেশের ফুটবলের জন্য ইতিবাচক।’
রানা-জীবনের মতো সিনিয়রদের দেখে তরুণ ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ দারুণ অনুপ্রাণিত, ‘আমি দেশসেরা ডিফেন্ডার হতে চাই। লক্ষ্যপূরণে কঠোর পরিশ্রম করছি, কোচের নির্দেশনা অনুসরণ করে সকালে জিম আর বিকেলে উইথ দ্য বল অনুশীলন করছি। এমনকি খাবারও খাচ্ছি বুঝে-শুনে। ছুটির সময়ও ফিটনেসে কোনও ছাড় দিচ্ছি না। কারণ এখন প্রতিযোগিতা আগের চেয়ে বেশি। এক পজিশনে একাধিক খেলোয়াড়ের মধ্যে লড়াই হয়।’
ফিটনেস নিয়ে শিষ্যদের সচেতনতা দেখে জেমি ডে’ও সন্তুষ্ট। জাতীয় দলের মিডফিল্ডার মাশুক মিয়া জনি জানালেন, ‘আমাদের নিয়ে কোচ আগের চেয়ে অনেক নির্ভার থাকেন এখন। ছুটি চলার সময়ও আমরা তার নির্দেশনা মেনে চলি। তাই কোচ ঢাকায় এসে আমাদের ফিটনেস নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এখন ক্যাম্পের শুরুতে আগের মতো ফিটনেস ঠিক করতে বাড়তি পরিশ্রমের দরকার হয় না।’