জোড়া গোলের পর নেইমারের হুঙ্কার

নেইমার-ম্যানইউএকটুর জন্য ছোঁয়া হয়নি চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি। গতবার ফাইনালে হারতে হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে। ওই দুঃখ মুছে প্যারিস সেন্ত জার্মেইয়ের জার্সিতে নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করেছিলেন নেইমার। কিন্তু নকআউট পর্বই তো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল ফরাসি ক্লাবটির! ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে না জিতলে কঠিন সমীকরণ মেলাতে হতো। এই অবস্থায় ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হলেন সেই নেইমারই। ম্যানইউয়ের মাঠে জোড়া গোল করে আশা বাঁচিয়ে রাখলেন পিএসজির।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ১০ জনের ম্যানইউকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। জয়ের নায়ক নেইমার। খাদের কিনারায় থাকা পিএসজিকে টেনে তুললেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়। ২০১৭ সালে রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে বার্সেলোনা থেকে প্যারিসে নাম লেখানো ফুটবলার প্রয়োজনের সময়েই জ্বলে উঠলেন। জোড়া গোলে জয় নিশ্চিতের পর তার হুঙ্কার, ইউরোপা লিগে খেলার জন্য যোগ দেননি পিএসজিতে।

এখনও নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয়নি তাদের। তবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ঘরের মাঠে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ইস্তাম্বুল বাসাকসেহিরের বিপক্ষে না হারলেই চলে যাবে নকআউট পর্বে। ‘এইচ’ গ্রুপের বাকি দুই দল ম্যানইউ ও আরবি লাইপজিগেরও সুযোগ আছে। তিন দলেরই সমান ৯ পয়েন্ট।

তবে ম্যানইউয়ের বিপক্ষে জিততে না পারলে ইউরোপা লিগে চলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হতো পিএসজির। ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা প্রতিযোগিতায় খেলা ‍প্রসঙ্গে এক সংবাদমাধ্যমকে নেইমার বলেছেন, ‘এই কারণেই আমি বলেছিলাম, আমাদের ভাবভঙ্গি বদলাতে হবে, নয়তো চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্ন ভুলতে হবে। তবে আমরা বদলে গেছি। আর এখন স্বপ্নটা আরও জীবন্ত হয়ে উঠেছে। অবশ্যই আমি কখনও বিদায় নেয়নি (গ্রুপ পর্ব থেকে) কিংবা খেলতে হয়নি ইউরোপা লিগে।’

চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার ‍স্বপ্ন নিয়েই পিএসজিতে তার নাম লেখানো। সেখানে ইউরোপা লিগে খেলাটা বেমানান। নেইমার আসলে সেটা কল্পনাই করতে পারেন না, ‘এটা (ইউরোপা লিগে খেলা) কখনও কল্পনাতেও আসেনি আমার, আর আসাটাও ভালো ব্যাপার নয়। এই ধরনের কঠিন মুহূর্ত যখন সামনে আসে, পেরিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আমার আছে এবং আমি দায়িত্ব নিতে পারি। ‍আমি এখানে (পিএসজি) ইউরোপা লিগে খেলতে আসিনি।’

ওল্ড ট্যাফোর্ডে ষষ্ঠ মিনিটে গোল করে পিএসজিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন নেইমার। তবে ৩২ মিনিটে ম্যানইউকে সমতায় ফেরান মার্কাস রাশফোর্ড। টান টান উত্তেজনার ম্যাচে ৬৯ মিনিটে মারকিনুসের গোলে পিএসজির এগিয়ে যাওয়ার পরের মিনিটেই লাল কার্ড দেখে ফ্রেদ মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় স্বাগিতকরা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে নেইমার জাল খুঁজে পেলে জয় নিশ্চিত হয় পিএসজির।

২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ অভিষেক হওয়ার পর নেইমার পেলেন ৩৮তম গোল। এই সময়কালে তার চেয়ে বেশি গোল করেছেন কেবল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (৭৯), রবার্ত লেভানদোভস্কি (৬০) ও লিওনেল মেসি (৫৯)।