‘দুর্নীতি-অনিয়ম করিনি, সম্মান থাকতে বিদায় নিয়েছি’

সুজিত কুমার ব্যানার্জী, বয়স ৪৩। ইচ্ছা করলে আরও কিছু দিন রেফারিং চালিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু ক্যারিয়ার আর দীর্ঘায়িত না করেই রেফারিংকে বিদায় বলে দিয়েছেন সাবেক এই ফুটবলার। প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী-বসুন্ধরা ম্যাচে টস করেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। বিদায় বেলায় আবেগমথিত কণ্ঠে বলেছেন, সম্মানের সঙ্গে মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারাটাই তার কাছে বড় বিষয়।

ঢাকার প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগ খেলে মাত্র ২৬ বছর বয়সে রেফারিংয়ে যুক্ত হন সুজিত। ২০০৬ সাল থেকে নিয়মিত ঘরোয়া ফুটবলে বাঁশি বাজিয়েছেন। এছাড়া মাঝে ফিফার রেফারিও হয়েছিলেন। কিন্তু চোটের কারণে সেখানে বেশিদিন থাকা হয়নি। ঘরের মাঠেই দেড় যুগের বেশি সময় ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছেন।

এবার ঘরোয়া ফুটবলে রেফারিং নিয়ে চরম বিতর্কের মাঝেই নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সুজিত। কিন্তু কেন এই সময়ে বিদায়? জবাবে বাংলা ট্রিবিউনকে সুজিত বলেছেন, ‘আসলে অনেক তো হলো। এবার সম্মান থাকতে থাকতে বিদায় নিচ্ছি। ক্যারিয়ারে কখনও রেফারিংয়ের জন্য আপস করিনি, দুর্নীতি-অনিয়ম করিনি। কেউ বলতে পারবে না ইচ্ছাকৃতভাবে বাঁশি বাজিয়েছি। হয়তো ভুল করতে পারি। তবে সেটা কখনও ইচ্ছাকৃত নয়। রেফারিদের নিয়ে সবসময় বিভিন্নরকম কথা হয়। এবারও অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। তবে আমি সবসময় নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছি।’

রেফারিদের নিয়ে বিতর্কের জবাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক সুজিতের ব্যাখ্যা, ‘রেফারিদের ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। তাই বলে কেউ ইচ্ছাকৃত বাঁশি বাজিয়েছে মনে হয় না। তবে সবারই আরও সতর্ক হয়ে কাজ করা উচিত। আসলে এই পেশায় যত শিক্ষিত ব্যক্তি আসবে, তত ভালো হবে।’

রেফারিং ছাড়ার আরও একটি কারণও আছে। সুজিত নিজে এএফসি ‘বি’ লাইসেন্স করেছেন। কোচ এডুকেটর হিসেবেও কাজ করছেন। এছাড়া রেফারিদের ইন্সস্ট্রাক্টর হিসেবেও কাজ করার ইচ্ছা তার, ‘মাঠের রেফারিং এখন আর করবো না। নতুন রেফারি তৈরি করবো। তৃণমূলে কাজ করছি। রেফারিং ছাড়লেও ফুটবলের সঙ্গেই আছি।’