বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েও মুরাদের মন পড়ে আছে আশ্রয়কেন্দ্রে

হাভিয়ের কাবরেরার ৩৫ জনের দলে আছেন ডিফেন্ডার মুরাদ হোসেন।  সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো লাল সবুজ দলের প্রাথমিক তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এমন খবরে ২৫ বছর বয়সী ফুটবলারের খুশি থাকার কথা। কিন্তু সেই আনন্দের মাঝে বিষাদ ছায়া ফেলেছে। ঘূর্নিঝড় মোখার কবলে যে তার পুরো পরিবার। প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলাতে তারা এখন আশ্রয়কেন্দ্রে।

মুরাদদের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপে। কাল রাতেই ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের কথা জানতে পেরে কর্তৃপক্ষের ডাকে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে উঠেছে পরিবারের সদস্যরা। দাদা-দাদি, মা ও এক ভাই আছে সেখানে। তবে এই দুর্যোগের মাঝে বাবা ও এক ভাই এখনও বাসায় অবস্থান করছেন।

অপর দিকে ঢাকায় চলছে প্রিমিয়ার লিগের খেলা। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারছেন না মুরাদ। এর মধ্যে আবার জাতীয় দলে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন। তাই শিহরণ জাগানো আনন্দটাও ভাগাভাগি করা যাচ্ছে না।

সবমিলিয়ে তার হরিষে বিষাদ। মুরাদ তাই বাংলা ট্রিবিউনের কাছে মনের অবস্থা বলতে গিয়ে জানালেন, ‘প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পেয়েছি। অনেক ভালো লাগছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা চিন্তা করে খারাপ লাগছে। বিশেষ করে আমার পরিবারের কথা ভেবে। এমনিতে আমরা কুতুবদিয়ার দ্বীপের মতো জায়গায় থাকি। সেখানে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। সবাই আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে। বাবা ও এক ভাই বাসায় অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তারাও সেখানে যাবে। এখন আল্লাহকে ডাকছি, যেন খারাপ কিছু না হয়।’

দ্বীপবাসী হওয়ায় প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে অভ্যস্ত মুরাদের পরিবার। তবে এবার ঝড়ের ভয়াবহতা নিয়ে দুশ্চিন্তা কাজ করছে। এরই মধ্যে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তার ২৭ জনের দলে জায়গা করে নেওয়াটাই চ্যালেঞ্জ। মুরাদ সেটা নিচ্ছেনও। পাসপোর্টও করতে দিচ্ছেন, আরও বলেছেন, ‘এখনও লিগের কয়েকটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। আশা করছি, এখানে ভালো খেলে কোচের মন জয় করতে পারবো। আমার পাসপোর্ট নেই। এখন তা করতে দেবো। যদি সাফের দলে খেলার সুযোগ হয়।’

মুরাদ স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের হয়ে টানা তিন বছর খেলেছেন। এবার প্রথমবার মোহামেডানের হয়ে রক্ষণভাগ সামলাচ্ছেন। এছাড়া সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরিও করে যাচ্ছেন। এখন দুর্যোগময় পরিস্থিতি উত্তরণের পাশাপাশি চূড়ান্ত দলে জায়গা করে নেওয়ার প্রত্যাশা করছেন মুরাদ।