মোহামেডানের কোচ হওয়ার কথা চিন্তাও করেননি শুভ

মওদুদুর রহমান শুভকাগজে-কলমে মোহামেডানকে ধরা হয়েছিল তিন নম্বর দল হিসেবে। কিন্তু প্রিমিয়ার হকি লিগের শেষ পর্যায়ে এসে ঐতিহ্যবাহী দলটি সব ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে শীর্ষে। শিরোপার স্বপ্ন তারা এখন দেখতেই পারে। আর এই স্বপ্নের সারথিদের অন্যতম যিনি, তিনি দলের তরুণ কোচ মওদুদুর রহমান শুভ।

প্রিমিয়ার লিগে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা নেই শুভর। তারপরও মোহামেডানের মতো দলের দায়িত্ব নিয়ে চমক দেখাচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক এই স্ট্রাইকার। অথচ মৌসুম শুরুর আগে চিন্তাও করেননি মোহামেডানের মতো দলের কোচ হবেন। আমন্ত্রণ পেতেই তাই লুফে নিয়েছিলেন, বাকিটা এখন স্বপ্নের মতো।

লিগে আবাহনী ও মেরিনার্সের মতো দলকে হারিয়ে শিরোপার পথে মোহামেডান। এই সাফল্যের নেপথ্যের কাহিনী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন শুভ, ‘টিম স্পিরিট। প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজের তাগিদে খেলেছে। নিজের সেরাটা দিতে পারছে। দলের জন্য সামর্থ্যের ১১০ ভাগ দিয়েছে। টিমে খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তা সবাই আমরা পরিবারের মতো করে আছি। এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই।’

সুপার ফাইভের আগে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থাকবে মোহামেডান। ভাগ্যের নেতিবাচক দিক না দেখলে সাদা-কালো দলটি শিরোপার কাছাকাছি অবস্থানে আছে। কোচ শুভ সেটাই বললেন, ‘শিরোপা স্বপ্ন দেখাই যায়। সুপার ফাইভসহ আরও পাঁচটি ম্যাচ বাকি আছে। এর মধ্যে একাধিক ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে যেহেতু আমরা পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে থাকব, সেক্ষেত্রে খেলোয়াড়রা যদি শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে পারে তাহলে লিগ শিরোপা জেতা কঠিন হবে না।’

১৯৯২ সালে শুভর হাতেখড়ি বিকেএসপিতে। অ্যাজাক্স ক্লাব দিয়ে লিগ শুরু। তারপর মোহামেডান ও আবাহনী হয়ে খেলেছেন ঊষায়। লিগে শতাধিক গোল আছে। ঘরোয়াতে সব মিলিয়ে ৩০০ গোলের অধিকারী। এছাড়া জাতীয় দলে ১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বর্তমানে বিকেএসপির কোচ হিসেবে কর্মরত। ছুটি নিয়েই মোহামেডানের মতো দলের ডাগ আউটে।

আবাহনীতে মাহবুহ হারুন ও মেরিনার্সে জার্মানির অলিভার কার্টস। দুজনেরই বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা আছে। সেই দুজন অভিজ্ঞ কোচদের কৌশল রুখে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শুভ, ‘আসলে ডাগ আউটে কে আছে তা চিন্তা করিনি। তারা তো ভালো কোচ। আমি আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী দল সাজিয়েছি। প্রতিপক্ষের কৌশল রুখে দিতে পেরে সফলতা পেয়েছি। আসলে শুধু পরিকল্পনা দিলেই তো হবে না। সেটার বাস্তবায়ন হতে হবে। আমাদের সাফল্যের পেছনে সহকারী কোচ শহীদুল্লাহ টিটু, ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স ও আসাদুজ্জামান চন্দনের ভূমিকা কম নয়। আমরা সবাই যে একটা টিম হিসেবে আছি।’