‘হকিতে নোংরা রাজনীতি চলছে’

হকি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুল বারী১৯৮৮ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল বারী। তার সময়ে হকিতে অনেক উত্থান-পতন হলেও অন্তত নির্বাচন নিয়ে কোনও ঝামেলা হয়নি। কিন্তু তিনি শারীরিক সমস্যার কারণে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে গোলমাল শুরু। সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে দুটি শিবির। নির্বাচনে জিততে তারা মরিয়া। অবস্থা এমনই গুরুতর যে একজনের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে আদালতে একটি রিটের কারণে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নির্বাচনই স্থগিত করে দিয়েছে।

হকির বর্তমান অবস্থা নিয়ে শামসুল বারী ভীষণ হতাশ। এক যুগ আগে হকি ফেডারেশন থেকে সরে দাঁড়ানো এই অভিজ্ঞ সংগঠক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘যখন দেখি দুটি পক্ষ ক্ষমতায় যেতে মরিয়া, কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে ফেডারেশনে যেতে উদগ্রীব, তখন নিজের কাছেই খারাপ লাগে। আসলে হকিতে নোংরা রাজনীতি চলছে। নোংরামির জন্য হকি এগোতে পারছে না, এক জায়গায় থেমে আছে।’

২০০৭ সালে শামসুল বারী সরে দাঁড়ানোর পর সাজেদ আদেল, খন্দকার জামিল, খাজা রহমতউল্লাহ ও আব্দুস সাদেক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু কেউই নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। মাঠের ভেতরে হোক বা বাইরে, প্রত্যেকেই বিরোধিতার সামনে পড়েছেন কোনও না কোনও সময়।

সত্তরের দশকে জাতীয় দলে ডিফেন্ডার হিসেবে খেলা শামসুল বারী সেজন্য সাংগঠনিক ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন, ‘আমার মেয়াদের শেষের দিকে জাহিদুর রহমান পুশকিনকে দক্ষ সংগঠক হিসেবে তৈরি করেছিলাম। কিন্তু ওর অকাল মৃত্যুর পর সব কিছু বদলে গেছে। এখন তো হকির পরিবেশই অন্যরকম। ফেডারেশন দুটি শিবিরে বিভক্ত। এটা একদমই কাম্য নয়। এমনিতেই হকিতে সংগঠক কম। তার ওপর সবাই বিভক্ত হয়ে পড়লে হকির উন্নতি হবে কী করে? হকির অবস্থা যে দিন দিন খারাপ হচ্ছে সেটা কেউ দেখছে না। এর জন্য দুই পক্ষই দায়ী।’

এমন দুঃসময়ে তার প্রত্যাশা, ‘দুই পক্ষ মিলে সমঝোতার মাধ্যমে একটা কমিটি করতে পারলে খুব ভালো হতো। তাহলে অন্তত নিজেদের মধ্যে বিভেদ থাকতো না। কিন্তু সেটা হচ্ছে কই! আমি মনে করি, যারা ফেডারেশনে আসবে তাদের সময় দিতে হবে। বাসায় বসে ফেডারেশন চালালে হবে না।’

এক সময় বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৪। এখন অবনমন হয়ে ৩৪তম স্থানে লাল-সবুজ দল। সেজন্য শামসুর বারীর মনে ভীষণ আক্ষেপ, ‘আমাদের সময়ে ওমান পাত্তাই পেতো না বাংলাদেশের বিপক্ষে। সেই দলটির কাছেই আমরা এখন হেরে যাই। ওমান সহ অন্য দলগুলো দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে, আর আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আসলে যতদিন কর্মকর্তারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারবেন না, ততদিন আমরাও এগিয়ে যেতে পারবো না।’