ছোটবেলা থেকে আনন্দ নিয়ে দাবা খেলছি। আমাদের সময় এতো সুযোগ-সুবিধা ছিল না, শেখানোর মতো কেউ ছিলেন না। নিজের চেষ্টায় দাবায় হাত পাকাতে হয়েছে। অথচ এখন কত সুবিধা খেলোয়াড়দের! আমি অবশ্য এখনও দাবা উপভোগ করি। উপভোগের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই গত মার্চে কাঠমান্ডুতে এশিয়ান জোনাল দাবায় উন্মুক্ত বিভাগে চ্যাম্পিয়ন।
এখনকার ছেলেমেয়েরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেও অনুপ্রেরণা পায়। অথচ আমাদের নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে খেলতে হয়েছে। ওই সময় কোনও ক্লাব ছিল না। আমি অবশ্য ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর লন্ডনে খেলতে যেতাম। বাংলাদেশ বিমান লন্ডনের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিতো। তবে বাকি খরচ নিজেকেই বহন করতে হতো। এখনকার মতো সুযোগ-সুবিধা না পেলেও আমরা মনের আনন্দে খেলেছি, খেলার জন্য খেলেছি। কিছু পাওয়ার আশায় দাবায় নাম লেখাইনি।
দাবায় মেয়েদের পেছনে পড়ে থাকা ভীষণ কষ্ট দেয় আমাকে। এই খেলায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা অনেক পিছিয়ে। আগের চেয়ে সুযোগ-সুবিধা অনেক বাড়লেও মেয়েরা তেমন এগিয়ে আসছে না। গ্র্যান্ডমাস্টাররা তাদের পেছনে অনেক সময় ব্যয় করছেন। দুই গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব ও আব্দুল্লাহ আল রাকিব বিশেষ প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তরুণ দাবাড়ুদের। আমিও চেষ্টা করেছিলাম, তবে সেটা আশির দশকে। তখন বয়স কম হলেও চেষ্টা করেছিলাম মেয়েদের জন্য কিছু করার। নিজ উদ্যোগে তিনটি টুর্নামেন্টের স্পন্সর যোগাড় করেছিলাম।
পরবর্তীতে সংগঠকের ভূমিকায় আর থাকা হয়নি। তবে লেখক হিসেবে দাবায় অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। ‘মজার খেলা দাবা’ নামে একটি বই লিখেছি স্বামীর অনুপ্রেরণায়। বইটি বাংলাদেশ ছাড়াও কলকাতায় বেশ জনপ্রিয়।
লেখক : মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার
/আরআই/