কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দামেই হোলসিম কিনছে লাফার্জ

অবশেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দাম ৫০৫ কোটি টাকাতেই হোলসিম বাংলাদেশকে কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট। সম্প্রতি লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের পর্ষদ সভায় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) সংশোধিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি বাস্তবায়নের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৪০ টাকায় হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের কাছে বিক্রির সংশোধিত চুক্তি কার্যকরের ম্যান্ডেট পেয়েছে তাদের সিইও। পরবর্তী ধাপে নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় শেয়ারহোল্ডারদের সব আপডেট জানাবে কোম্পানি।
পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের পর বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) ১১ কোটি ৭০ লাখ ডলারে (ডলারের মান ৮০ টাকা ধরে ৯০০ কোটি টাকার বেশি) হোলসিম বাংলাদেশের শতভাগ সম্পদ কিনে তা একীভূত করে দেওয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিলেন লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের শেয়ারহোল্ডাররা। দুই কোম্পানির বৈশ্বিক হেডকোয়ার্টার একীভূত হওয়ার পর বাংলাদেশে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি সামনে রেখে লাফার্জ সুরমা তাদের কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে রাখে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। যদিও স্টক এক্সচেঞ্জে এখনও কোম্পানিটির পুরনো নামই ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৭ সেপ্টেম্বর মাসে তাদের এ অধিগ্রহণ বাবদ ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৪০ টাকা বিদেশে পাঠানোর অনুমোদন দেয়। অর্থাৎ হোলসিম বাংলাদেশের ৮৮ হাজার ২৪৪টি (শতভাগ) শেয়ারের জন্য এ মূল্যই নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এরপর স্টক এক্সচেঞ্জ মারফত লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ জানিয়েছিল, এ বিষয়ে তাদের অথোরাইজড ডিলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে দেওয়া এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ৬ কোটি ২৫ লাখ ২৭ হাজার ১৮৮ ডলারে (১৭ সেপ্টেম্বরের বিনিময় হারের ভিত্তিতে) হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার অধিগ্রহণের এবং সে অর্থ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হোল্ডারফিন বিভি’র নামে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ঐকমত্যের চেয়ে প্রায় ৪৬ শতাংশ কম দামে লাফার্জ সুরমার কাছে হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার হোল্ডারফিন বিভি বিক্রি করতে সম্মত হবে কিনা, এ বিষয়টি নিয়েও দ্বিধা ছিল। সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে, অবশেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া মূল্যেই হোলসিমকে কিনে নিচ্ছে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট।
এর আগে, ২০১৪ সালের এপ্রিলে বৈশ্বিকভাবে লাফার্জ ও হোলসিম একীভূত হওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ২০১৫ সালের জুলাইতে বৈশ্বিকভাবে লাফার্জ ও হোলসিম একীভূত হওয়ার পর বিশ্বের সিমেন্ট খাতের বৃহৎ দুই কোম্পানি এক ছাতার নিচে এসে ‘লাফার্জ হোলসিম’ নামে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিমেন্ট কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী দুই গোষ্ঠীর ব্যবসা একীভূত হয়ে আসে।
আরও পড়ুন-
চালের দাম অসহনীয়: অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নিয়োগে সার্চ কমিটি