X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাকালেও কোটিপতি বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার

গোলাম মওলা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:১৩আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:২৬

বাংলাদেশ ব্যাংক করোনা মহামারিকালে যেখানে সাধারণ মানুষের আয় কমে গেছে, সেখানে দেশে নতুন করে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত মার্চ থেকে জুন এই তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এই বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজার ৩৭ জন। গত মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫ জন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, দেশের কোটি কোটি লোক নিঃস্ব হয়েছে বলেই করোনাকালীন সময়ও সাড়ে তিন হাজার মানুষ নতুন করে কোটিপতি হয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ব্যাংক থেকে লুট করা একটি শ্রেণি কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। আবার তারাই হয়তো ব্যাংকে টাকা রাখছেন। তার মতে, করোনাকালে সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। কিন্তু বড় লোক বা ধনীদের আয় বেড়েছে। ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী বেড়ে যাওয়া তারই প্রমাণ।
এদিকে জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে জানানো হয়, করোনার কারণে আয় কমেছে শতকরা ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সেসব পরিবার, যাদের বাৎসরিক আয় ১ লাখ টাকার কম।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত এক বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৫ হাজার ৬৪১ জন। এরমধ্যে করোনাকালেই বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন। অর্থাৎ গত বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ৩৯৬ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর থেকে ব্যাংকে কোটিপতির সংখ্যা কমে যায়। কিন্তু করোনাকালে (চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন) হঠাৎ বেড়ে গেছে এই সংখ্যা। যদিও ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৮৭৭ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বিগত ১১ বছর ধরে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৯ সালের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৯২ জন। এখন এই সংখ্যা ৮৬ হাজার ৩৭ জন। অর্থাৎ গত ১১ বছরে ৬৪ হাজার ৫৪৫ জন মানুষ কোটিপতির তালিকায় নতুন করে নাম লেখিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জুন শেষে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন এক হাজার ২৬৯ জন। ৪০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন ৪১৮ জন। ৩৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ২২৪ জন। ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৩৮৩ জন। ২৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৬০৫ জন। ২০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৯৯২ জন। ১৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ১ হাজার ৪৩০ জন। ১০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৩ হাজার ৩০৫ জন। পাঁচ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৯ হাজার ৫২৯ জন। এক কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা আমানত রাখা ব্যক্তি ৬৭ হাজার ৮৮২ জন।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচ জন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এই সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়ায়। ১৯৮০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৯৪৩ জন। ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জনে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ১৯ হাজার ১৬৩ জন।

/এমআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
শিবনারায়ণের চোখে আলো দেখছেন মশিউর ও কালাম
শিবনারায়ণের চোখে আলো দেখছেন মশিউর ও কালাম
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস