রাজধানীর ফকিরাপুলে গোয়েন্দা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পিকে অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলিসহ গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি বলছে, গ্রেফতার এড়াতে সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়ার আগে যশোরে একটি বাড়িতে আত্মগোপনে থাকার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের তথ্য জানতে পেরে আসামি যশোরে লুকিয়ে থাকা বাসার গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেই বাসার নারী ও শিশুকে হত্যার হুমকি দিতে থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় একাধিক সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (২৯ জুন) বিকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) নাসিরুল ইসলাম।
শুক্রবার (২৭ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে যশোর জেলার ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ম্যাগজিন ও দেড় শতাধিক গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার বাপ্পির সহযোগীরা হলো- আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে বোমা রিপন ও মো. কামরুল হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) নাসিরুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ জুন রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল থানার ফকিরাপুল এলাকার ডিআইটি এক্সটেনশন রোডে অভিযান চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আবদুর রহমান নামে একজনকে আটক করা হয়। পরদিন ১৯ জুন রাত সোয়া ১২টার দিকে আবদুর রহমানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পল্টন থেকে আসা একটি প্রাইভেটকারকে সিগন্যাল দিয়ে থামার নির্দেশ দেন ডিবি পুলিশ সদস্যরা। গাড়িতে অবস্থানরত মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের তল্লাশি ও গ্রেফতারকালে গাড়ির ভেতর থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি হঠাৎ ডিবি পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যেতে থাকে।
এ সময় ডিবি পুলিশ সদস্যরা সন্ত্রাসী বাপ্পিকে ধাওয়া করে। কিন্তু সে গ্রেফতার এড়িয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ধরতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ডিবি।
এরই মধ্যে বাপ্পি দেশ ছাড়তে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির দোতলা বাড়িতে অবস্থান নেয়। সেখানে নজরুলের জামাতা আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ও বোমা রিপন এবং মো. কামরুল হাসান উপস্থিত ছিল।
গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাপ্পি বাসায় থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দেয়। বাসায় গ্যাস জমাট করে পুলিশকে হুমকি দেয়, যদি তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয় তাহলে বাসায় থাকা শিশু ও নারীদের হত্যা করবে।
পরবর্তীতে অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় বাসার গ্যাস শূন্য করে তাকে গ্রেফতার করে।
ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, বাপ্পির গ্রুপের সদস্য ২৫ জন। এখন পর্যন্ত আমরা মূলহোতা বাপ্পিসহ আরও দুই জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। ২০১০ সাল থেকে বাপ্পি মাদক বিক্রি করে আসছে। বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। তার গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।