গ্রাহকের জমা টাকা সুরক্ষার জন্য ব্যাংকগুলোকে আমানতের ১৩ শতাংশ অর্থ বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হয়। আর তা সংরক্ষণ করতে হয় সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ড কেনার মাধ্যমে। সংকটে পড়া পদ্মা ব্যাংক (ফারমার্স) ২০১৭ সাল থেকে তা সংরক্ষণ করতে পারছে না। এ কারণে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদ্মা ব্যাংককে বড় ধরনের ছাড় দিয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার (২ জুন) নতুন করে ব্যাংকটিকে সুযোগ দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের সিআরআর’র অতিরিক্ত নগদ জমাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদের রক্ষণীয় মাত্রা ব্যাংকটির মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ২০২২ সালে অন্যূন ৯.৭৫ শতাংশে এবং ২০২৩ সালে অন্যূন ১৩ শতাংশে নির্ধারণ করা হলেও ব্যাংকটি প্রয়োজনীয় অর্থ সংরক্ষণ করতে পারেনি। এ কারণে সরকারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে পদ্মা ব্যাংকের সিআরআর-এর অতিরিক্ত নগদ জমাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদের রক্ষণীয় মাত্রা ব্যাংকটির মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অন্যূন ৩.২৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে অন্যূন ৬.৫০ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে অন্যূন ৯.৭৫ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এই আদেশ ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে কার্যকর মর্মে গণ্য হবে।
এর আগে পদ্মা ব্যাংকে ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে নগদ অংশ সংরক্ষণ বা সিআরআর (ক্যাশ রিজার্ভ রিকোয়ারমেন্ট) ও বিধিবদ্ধ জমা বা এসএলআরের (স্ট্যাটিউটরি লিকুইডিটি রেশিও) অর্থ জমা রাখার বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মওকুফ করা হয় দণ্ড, সুদ ও জরিমানা। এছাড়া পদ্মা ব্যাংকে বাঁচিয়ে রাখতে আর্থিক প্রতিবেদনে ‘তথ্য গোপন’ রাখার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকটি বন্ধের সম্মুখীন হলে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো মূলধন জোগান দেয়। পরে ব্যাংকটি ফারমার্স থেকে নাম বদলে পদ্মা ব্যাংক নামকরণ করে। পাশাপাশি ব্যাংকটিকে বেশ কিছু নীতি ছাড় দেওয়া হয়।
শুরুতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তার মেয়াদেই নতুন ব্যাংকটি নানা ধরনের ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে ধ্বংসের মুখে পড়ে। পরে সরকারের নির্দেশে সরকারি ব্যাংকগুলো ওই ব্যাংকে মূলধন জোগান দেয়।