‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে সরকারের সদিচ্ছা এবং আংশিক অগ্রগতিকে স্বাগত জানালেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করায় ঘোষিত অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। একইসঙ্গে তাকে রাজস্ব ভবনে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সংগঠনের পক্ষে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব খাত পুনর্গঠনের জন্য গত ১২ মে মধ্যরাতে জারি হওয়া অধ্যাদেশ বাতিল ও টেকসই রাজস্ব সংস্কারসহ চার দফা দাবিতে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৪ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।
এরপর ২৫ মে রাতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টার দফতর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়— সরকার এনবিআর বিলুপ্ত করবে না; বরং একে একটি বিশেষায়িত ও স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে আরও শক্তিশালী করা হবে। একইসঙ্গে রাজস্ব নীতি প্রণয়নে আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের কথাও জানানো হয়। এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ মে থেকে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কর্মস্থলে ফিরে যান কর্মকর্তারা।
তবে দ্বিতীয় দাবির বিষয়ে— অর্থাৎ এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ— এখনও কোনও সিদ্ধান্ত না আসায় সংশ্লিষ্টদের মাঝে ‘আস্থার সংকট’ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রকৃত সংস্কার কার্যক্রমে বাধা প্রদান, সরকারকে বিভ্রান্ত করা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টি, পূর্বে ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি ও ভ্যাট হার বাড়িয়ে অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে। তাকে ‘যড়যন্ত্রকারী ও প্রতিবন্ধক’ আখ্যায়িত করে বলা হয়, এমন নেতিবাচক অবস্থান না থাকলে সমস্যা অনেক আগেই সমাধান হতো।
এ প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে সংগঠনটি জানিয়েছে, সরকার এই পদে একজন অভিজ্ঞ, দক্ষ ও রাজস্ব খাত বিষয়ে গভীর জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে— এমনটাই তাদের প্রত্যাশা।
সংগঠনটি আশা প্রকাশ করেছে, রাজস্ব ব্যবস্থায় গঠনমূলক সংস্কার এবং রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে সরকার শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।