২০১৯ সালের পর থেকে অর্থনীতির জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১০টি অঞ্চল কার্যক্রম শুরু করেছে। রবিবার (২৩ অক্টোবর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে মতবিনিময় সভা করেছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে বেজা। আগামী আগামী ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
লিখিত বক্তব্যে বেজার চেয়ারম্যান জানান, ২০১৯ সালের পর থেকে ইকোনমির জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ১০টি অঞ্চল কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে এ যাবত প্রায় ২২.১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে। এ থেকে আরও ২৮টি অঞ্চল ইতোমধ্যে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া ১২টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতোমধ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক শিল্পোৎপাদন শুরু করেছে এবং আরও ৬১টি শিল্প নির্মাণাধীন রয়েছে। এ অঞ্চলগুলোতে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে— জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়েসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে।
বেজা ঝামেলামুক্ত ব্যবসা পরিচালনার জন্য ‘ওএসএস আইন, ২০১৮’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের প্রথম ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) সেন্টার চালু করেছে। বর্তমানে বেজা ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) সেন্টার থেকে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২৫টি পরিষেবা প্রদান করছে, যার মধ্যে ৪৮টি পরিষেবা অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে প্রথমবারের মতো উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ৪টি শিল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, জাপানের নিপ্পন, বাংলাদেশ ম্যাকডোনাল্ড ও টিকে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলেও প্রথমবারের মতো উদ্বোধন হতে যাচ্ছে একটি কারখানা— ডাবল গ্লেজিং লিমিটেড। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের আরও ৯টি শিল্প ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ পিভিসি কারখানা।
সরকারি ও বেসরকারি মিলে ১৪টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাণিজ্যিক আত্মপ্রকাশের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এই লক্ষ্যে ১৪টি শিল্পে ইতোমধ্যে প্রায় ৯৬৭.৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও ৩৩১.২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৭ হাজার ৪৫৬ জন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ইআরএফের সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম।
