X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এনার্জি অডিট হবে কিন্তু অডিটরই নেই!

সঞ্চিতা সীতু
২৫ আগস্ট ২০২০, ২২:০৬আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২০, ২৩:৫২

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি জ্বালানির দক্ষ ব্যবহারে হতে পারে সাশ্রয়—এই চিন্তা থেকেই ২০৩০ সাল মেয়াদের একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার। মহাপরিকল্পনায় ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ ভাগ এবং আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ ভাগ জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এজন্য প্রয়োজন এনার্জি অডিটর নিয়োগ দেওয়া। কিন্তু জ্বালানি বিভাগ সেই কাজটি এখনও করে উঠতে পারেনি।



জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান বলেন, ‘জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য প্রয়োজন এনার্জি অডিট। আর এনার্জি অডিট করার জন্য প্রয়োজন এনার্জি অডিটর। কিন্তু আমাদের কোনও এনার্জি অডিটর নেই। আমরা টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)-এর কাছে গিয়েছি। তারা এখন আমাদের জন্য অডিটর নিয়োগ দিচ্ছে।’

দেশে এখন প্রতিদিন প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করা হয়। নতুন অনুসন্ধান না করায় গ্যাসের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমছে। কিন্তু এর বিপরীতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকায় দেশে প্রতিনিয়ত জ্বালানির ব্যবহার বাড়ছে। ফলে সরকার নানাভাবে জ্বালানি সাশ্রয়ের চেষ্টা করছে।

মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠান যেমন বছর শেষে আয়-ব্যয়ের হিসাব অডিটরের মাধ্যমে নিরীক্ষা করে, ঠিক একইভাবে জ্বালানি ব্যবহারেও সেই অডিট করা হবে। এক্ষেত্রে দেখা হবে কী কী যন্ত্রাংশ ব্যবহার করছে। এসব যন্ত্রাংশে কী পরিমাণ জ্বালানি খরচ হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জ্বালানি খরচ হলে তা কমানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এই প্রক্রিয়াতে জ্বালানি সাশ্রয়ী উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হবে। এতে প্রতিষ্ঠানের জ্বালানি বাবদ ব্যয় যেমন কম হবে, মুনাফার পরিমাণ বাড়বে। আবার জ্বালানির সাশ্রয় হলে সেই জ্বালানি অন্যরা ব্যবহার করতে পারবে। পরিকল্পনা ভালো হলেও এটি দেশের জন্য একেবারে নতুন ধারণা। ফলে যোগ্য লোকবলের অভাব রয়েছে। দেশে এনার্জি অডিট করে এমন কোনও প্রতিষ্ঠান এখনও সেভাবে গড়ে ওঠেনি।’

বলা হচ্ছে ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ ভাগ ও আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ ভাগ জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত আছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৭৮ হাজার মিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাসের সমপরিমাণ জ্বালানি সাশ্রয় হবে। যা এলএনজিসহ অন্যান্য জ্বালানি আমদানির ব্যয় কমাবে। মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের সময় লক্ষ করা যায় যে, দেশে আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে যথাক্রমে প্রাথমিক জ্বালানির প্রায় ৩১, ৪৮ ও ৬ ভাগ ব্যবহৃত হয়। মাস্টারপ্ল্যানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে জ্বালানির বৃহৎ ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জ্বালানি সাশ্রয় নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, ‘বাংলাদেশে শিল্প, বাণিজ্যিক খাতে জ্বালানি দক্ষতা ও সাশ্রয় নিশ্চিতকরণের জন্য জ্বালানি নিরীক্ষা প্রবিধানমালা-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। ওই প্রবিধানমালা অনুযায়ী জ্বালানির বৃহৎ ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজাইনেটেড কাস্টমার (ডিসি) হিসেবে ঘোষণা করে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর জ্বালানি দক্ষতা ও সাশ্রয় নিশ্চিত করা হবে।’

যদিও ইতোমধ্যে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) নিজ উদ্যোগে এবং বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার সহযোগিতায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় ও শিল্প কারখানায় জ্বালানি নিরীক্ষা পরিচালনা করেছে। তবে দেশের সব প্রতিষ্ঠানে এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে অনেক বেশি সংখ্যক অডিটরের প্রয়োজন। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান অডিট করবে তাদেরও এর গুরুত্ব বুঝতে হবে।


/এনএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা