X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি

গোলাম মওলা
০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৪৩আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:১৮

বাজারে প্রচুর শীতের সবজি এসেছে। সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীতে সবজি আসছে। সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণে অধিকাংশ সবজির দাম কমে গেছে। ক্রেতারাও বলছেন, অনেকদিন পর তারা সস্তায় সবজি কিনতে পারছেন। রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় কিছু সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। দাম কমায় স্বস্তি মিলেছে ক্রেতাদের। এ প্রসঙ্গে রাজধানীর গোপীবাগ রেল গেট বাজারে আসা ক্রেতা তানভীর আহমেদ বলেন, ‘অনেকদিন পর সস্তায় সবজি কিনতে পারছি।’ তিনি উল্লেখ করেন, সবজির দাম যেভাবে কমেছে— একইভাবে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাও জরুরি।’  সেগুনবাগিচায় কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বলেন,  ‘শীতকালীন সবজি বাজারে আসলেও অন্যান্য বছরের মতো দাম কমছে না। বরং দাম এখনও অনেক বেশি।’

এই বাজারের নিয়মিত ক্রেতা সাহিদ রুমেল বলেন, ‘দূর থেকে মনে হয় দাম কমেছে। কিন্তু কিনতে গেলে দেখি— সব ধরনের সবজির কেজিতে ৮/১০ টাকা বেশি নিচ্ছে। মাঝারি মানের ফুলকপি কিনতে হচ্ছে ৩৫ টাকা করে।’ তিনি মনে করেন, এখন সবজির মৌসুম তারপরও সবজির দাম সেভাবে কমছে না।

এদিকে একই বাজারের ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম  বলেন, ‘এখন শীতকালীন শাক-সবজি বেশি আসছে। এরই মধ্যে শীতকালীন সব ধরনের সবজি বাজারে আসতেও শুরু করেছে। সে কারণে দামও কমেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, বাজারে প্রতিনিয়তই আসছে শীতের সবজি। তাই সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচ, নতুন আলু, মূলা, শিম এবং বেগুনের দাম কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে। তবে শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে।

অক্টোবর থেকে গত নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতিও কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাস শেষে মূল্যস্ফীতি অক্টোবর থেকে শূন্য দশমিক ৬ কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান  বলেন, ‘সেপ্টেম্বর থেকে আগস্টে হার কিছুটা বেড়েছিল, যা এখন কমে আসছে। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ১০ ও আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। নভেম্বর মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ হয়েছে, যা আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।

তবে ভোক্তাতারা বলছেন, খুচরা বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমলেও অনেক নিত্যপণ্যের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিশেষ করে নতুন আমন ধান বাজারে এলেও চালের দাম না কমায় অস্বস্তির কথা বলছেন ভোক্তারা।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়,এক সপ্তাহ আগে ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজিতে। ৫০ টাকা কেজির শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে। ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মূলা বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজিতে। ৮০ টাকা কেজির বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। পটল ও লতির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। আর ৩০ টাকা কেজির পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজিতে।

বাজারে প্রতি কেজি পুরোনো আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তোহে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা কেজি।  নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের পাতা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটোর দাম ৩০-৩৫ টাকা কেজি।

কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে, যা সপ্তাহ আগেও ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি। ঢেঁড়সের কেজি ৫০-৬০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, উস্তে ৮০ টাকা এবং গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে।

এছাড়া প্রতি পিস লাউ ৪৫-৬০ টাকা, ফুলকপি ২০-৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫-৪০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহে এ সবজির দাম ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।  লালশাক প্রতি আঁটি ১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা কেজিতে। আদানি ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজিতে।

গত দুই সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। বেড়েছে আটার দামও। খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটার কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।  কিছু দোকানে খোলা চিনি পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা লিটার।

ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে। পাকিস্তানি মুরগি ২৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৩০ টাকা, কক মুরগি ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা পিস। মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা ডজন। অর্থাৎ ৪০ টাকা হালিতে। এদিকে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০-৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০-৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। চিংড়ির দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। মাঝারি মানের রুই ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। বড় রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। পুঁটি মাছ ২৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, টাকি মাছ ৬০০ টাকা, রূপচাঁদা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ১১০০ টাকা এবং এক কেজির কম ওজনের ইলিশ ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী, তীব্র গরমকে দুষছেন বিক্রেতারা
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
সর্বশেষ খবর
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি