X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রাহকের অংশগ্রহণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিলে ১২ হাজার কোটি টাকা

সঞ্চিতা সীতু
০৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১:১৭আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:১০

বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিলে গ্রাহকের ছোট ছোট অংশ মিলে জমেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার এই তহবিলে ছোট তো বটেই, গড়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রও। কিন্তু প্রচার না থাকায় গ্রাহকরা জানেন না যে কত বড় বড় প্রকল্পে তারা অবদান রাখছেন।

গ্রাহকরা যে বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করেন সেখান থেকে প্রতি ইউনিটে ১৫ পয়সা জমা হয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিলে। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে এই অর্থ ব্যবহারের একটি নীতিমালা করেছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।

কমিশন সূত্র বলছে, গত আগস্ট পর্যন্ত তাদের কাছে হিসাব দিয়েছে পিডিবি। তাতে দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন তহবিলে মুনাফাসহ সংস্থানকৃত অর্থের পরিমাণ ১১ হাজার ৮৪৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

পিডিবি বলছে, একটা সময় ছিল উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। এখন গ্রাহকের দেওয়া টাকাতেই বড় কোনও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব।

পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত একটি প্রকল্পে ২০ থেকে ৩০ ভাগ মূলধনি বিনিয়োগ হয়। হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হলে অন্তত ২০০-৩০০ কোটি টাকা নিজেদের হাতে না থাকলে ঋণ পাওয়া সম্ভব হয় না। কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই ঋণ দিতে চায় না।

আগে মূলধনি বিনিয়োগের অর্থ সংস্থান করা কঠিন ছিল। এখন সেই জটিলতা নেই। বরং গ্রাহকের এত টাকা তহবিলে জমেছে যে তা খরচ করাই সম্ভব হচ্ছে না।

১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরিত হয়েছে ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। বলা হচ্ছে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তহবিলের এফডিআর এবং এসএনডি অ্যাকাউন্টে মোট ৫ হাজার ৮১০ কোটি ২৬ লাখ টাকা জমা রয়েছে।

এই তহবিলের অর্থায়নে এ পর্যন্ত পাঁচটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে—সিলেট ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টার্বাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টে রূপান্তর। যার ফলে একই জ্বালানি খরচে ১৫০ মেগাওয়াটের স্থলে ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব হবে।

বিবিয়ানাতে পিডিবি একটি গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে তহবিলের টাকায়। এ ছাড়া শাহজীবাজার গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এবং রাউজান ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রেও এখান থেকে বিনিয়োগ করা হয়েছে। গ্রাহকের টাকায় গড়ে ওঠা এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনও শুরু করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘এই তহবিল করা হয়েছিল পিডিবির লোকসান কমানোর উদ্দেশ্যে, যাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা তারা না বলে। বাস্তবে সেটি এখনও না হলেও অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা গেছে এই তহবিলের মাধ্যমে। ভবিষ্যতে এর কারণেই হয়তো আমাদের আর বিদ‌্যুতের দাম বাড়াতে হবে না।’

ইজাজ হোসেন আরও বলেন, ‘এ ধরনের তহবিল আরও প্রয়োজন। যেমন গ্রিন এনার্জি বেইজড তহবিল দরকার। যার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে প্রাধান্য দিয়ে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বাদ দেওয়া সহজ হবে।’

তিনি বলেন, তবে সব তহবিলের ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে তহবিলের টাকা যৌক্তিক খাতে খরচ হয়।

/এফএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
জাপোরিজ্জিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল
রূপপুরে আরও একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
‘বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে ভারত-নেপালকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে’
সর্বশেষ খবর
অনুপ্রাণন-এর মোড়ক উন্মোচন, বই আলোচনা ও লেখক সম্মাননা
অনুপ্রাণন-এর মোড়ক উন্মোচন, বই আলোচনা ও লেখক সম্মাননা
উত্তর ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাত, সরিয়ে নেয়া হয়েছে ১১ হাজার মানুষ
উত্তর ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাত, সরিয়ে নেয়া হয়েছে ১১ হাজার মানুষ
শরিফুলের গতিতে উড়ে গেলো শেখ জামাল
শরিফুলের গতিতে উড়ে গেলো শেখ জামাল
ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া কি আলোর মুখ দেখবে?
ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া কি আলোর মুখ দেখবে?
সর্বাধিক পঠিত
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট
তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট