রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দীর্ঘ অনুপস্থিতি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক- কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শরীফা সলোয়া ডীনা, অর্থ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান সেলিম প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের চেম্বারের পাশে সভাকক্ষে অবস্থান করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক সভাকক্ষে গিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে অবস্থান নেন। এসময় সভাকক্ষের বাইরে অবস্থান নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পরে রাত ৮টার দিকে উপ-উপাচার্য ও অর্থ পরিচালক ঢাকায় গিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে আর কোনও বৈঠক করবেন না ঘোষণা দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয় বলে জানান সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিউর রহমান।
শিক্ষকদের অভিযোগ, উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ তার কর্মকালের ১৩০০ দিনের মধ্যে ১১০০ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। বাকি সময় ক্যাম্পাসে আসলেও সকালে এসে বিকালে চলে গেছেন। তাদের আরও অভিযোগ তার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি ধবংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়াবহ প্রশাসনিক ও একাডেমিক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় উপাচার্য না আসা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনিয়ম দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন সেগুলোকে মেরামতের জন্য উপাচার্যকে এখানে আসতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সহ-সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম বলেন, উপাচার্য না আসায় তাকে দেওয়া স্মারকলিপি আমরা তার চেম্বারে সাঁটিয়ে দিয়েছি। তার উপস্থিতির হাজিরা খাতাও সেখানে দিয়েছি। অনেকবার তাকে আমাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছি। এখন উনি যা করছেন, একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছেন। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তিনি শিক্ষক নিয়োগ করছেন। প্রতিটি বিভাগকে তিনি ধ্বংস করে দিয়েছেন। উনি পরীক্ষা নিচ্ছেন অবৈধভাবে, রেজাল্ট দিচ্ছেন অবৈধভাবে। প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করছেন। আমরা অনেকবার তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি, আমাদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেছি। উনি এসবের কোনও তোয়াক্কা করছেন না।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শরীফা সলোয়া ডীনা বলেন, তারা আমাকে বের হতে দিচ্ছে না। আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি, তাকে ফোনে পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়, তবে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।