X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

এলাকাছাড়া রানার সহযোগীরা

সাভার প্রতিনিধি
২৪ এপ্রিল ২০১৮, ১৯:৫৯আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০১৮, ২০:০৯

সাভারে বাজার রোড এলাকায় রানার চার তলা বাড়ি সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড ও বাজার রোড এলাকায় সোহেল রানা নামটি ছিল আতঙ্কের। সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত রানার এলাকায় ব্যাপক প্রতাপ ছিল। রানা বা তার লোকজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে চাইতেন স্থানীয়রা। তাদের কোনও অপকর্মের প্রতিবাদ করারও সাহস পেতেন না অনেকে। তবে রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই এলাকাছাড়া রানার সহযোগীরা। এই পাঁচ বছরেও তাদের আর সাভারে দেখা যায়নি। 

সোহেল রানা (ফাইল ছবি) সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে জমি দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা রানার মালিকানাধীন রানা প্লাজা ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ধসে পড়ে। এতে ওই ভবনে থাকা কয়েকটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৬ জন কর্মী প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব বরণসহ আহত হন হাজারো কর্মী। এ সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর পতন ঘটে রানার ‘সাম্রাজ্যের’। তার বাহিনীর সদস্যরাও ওই ঘটনার পর এলাকা ছাড়ে।

এক সময় রানার বাড়িটি জমজমাট থাকত তার বাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন লোকজনের আনাগোনায়। এখন বাড়িটিতে শুনশান নিরবতা। পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা ছাড়া কেউ আর সে বাড়িতে যায় না।

জানা গেছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে সিঙ্গাইর এলাকা থেকে রানার বাবা আব্দুল খালেক সাভারে আসেন। ভাড়া বাড়িতে থেকে ফেরি করে তেল বিক্রি করতেন তিনি। এ কারণে তার বাবাকে ‘কুলু খালেক’ নামেই চেনেন অনেকে। পরে খৈলের ব্যবসা শুরু করেন খালেক। সাভারের নামাবাজার এলাকায় গড়ে তোলেন খৈলের মিল। এরপর থেকেই রানার পরিবারের অর্থনৈতিক উত্থান শুরু হয়।

প্রায় ২৪ বছর আগে ছাত্রনেতা হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় হয় রানার। নিজে স্কুলের গণ্ডি পেরোতে না পারলেও ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হয়ে ধীরে ধীরে ওই নেতার ডানহাতে পরিণত হয় রানা। গড়ে তোলে নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী। জড়িয়ে পড়ে অস্ত্র, মাদক ব্যবসা ও জমি দখলে। ২০০৭ সালে বাসস্ট্যান্ডে নির্মাণ করে নিজের নামে ‘রানা প্লাজা’।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তখনকার সংসদ সদস্য ও দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে রানা। ধীরে ধীরে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড ও বাজার রোড এলাকাসহ সাভারের বিভিন্ন এলাকায় প্রভাব বিস্তার শুরু করে সে।

সাভার বাজার রোড এলাকার ব্যবসায়ী হালিম ও মশিউরসহ একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এলাকায় জমি দখলসহ বিভিন্ন অনৈতিকাজে একক আধিপত্য বিস্তার করে রানা।

সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রানা প্লাজা ভবন ছাড়াও বাজার রোড এলাকায় চার তলা বাড়ি, তার পাশেই রানা টাওয়ার নামের আরেকটি ৮ তলার নির্মাণাধীন ভবন রয়েছে রানার।

একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, রানা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে এলাকার মানুষজন এক প্রকার জিম্মি হয়ে ছিল। রানার বাড়ি ও রানা প্লাজার আশপাশের এলাকার লোকজন সবসময় রানা বাহিনীর আতঙ্কে দিন কাটাতেন।

সরেজমিনে বাজার রোড এলাকায় রানার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চারতলা ভবনের বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় থাকে রানার পরিবার। বাকি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেওয়া। মূল ফটকের ভেতরে প্রবেশের পরই শুনশান দেখা যায় বাড়িটি। ভবনের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে পাওয়া যায় রানার বাবা কুলু খালেককে।

তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তার ছেলে নির্দোষ, সবাই মিথ্যাচার করে তার ছেলেকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

রানার এ বাড়ির পাশেই রানা টাওয়ারের সামনের ফুটপাতে দোকান বসিয়েছেন কিছু হকার। গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান। একজন চায়ের দোকানি অকপটে বললেন, রানার এই এলাকায় একচ্ছত্র প্রভাব ছিল। তবে গত ৫ বছর সে জেলে থাকায় কারও মধ্যে রানার বাহিনী নিয়ে এখন আর কোনও আতঙ্ক নেই। এছাড়াও রানা টাওয়ার সরকার সিলগালা করে দিয়েছে।

/এএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা