X
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
১০ আষাঢ় ১৪৩২

বুলবুলের পরাজয়ের নেপথ্যে

দুলাল আব্দুল্লাহ, রাজশাহী
০২ আগস্ট ২০১৮, ২৩:১১আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০১৮, ১৭:৫৪

বুলবুলের পরাজয়ের নেপথ্যে প্রশাসনের ভয় ও আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তারের কারণে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রাজশাহীতে নির্বাচনি উৎসবের আমেজ তৈরি করতে পারেনি। এটিই বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পরাজয়ের মূল কারণ। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে ভোট কারচুপিসহ নানা অনিয়ম ও গ্রেফতার আতঙ্কের কারণও রয়েছে। রাজশাহীর বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। যদিও বুলবুলের পরাজয়ের পর স্থানীয় বিএনপির নেতারা ভোটের ফল নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছেন না। এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ ও তথ্য-প্রমাণ আগামীকাল শুক্রবার (৩ আগস্ট) ঢাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তুলে ধরবেন রাজশাহীর নেতাকর্মীরা।
তবে নির্বাচনে ভোট কারচুপি নিয়ে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরাজিত হলে প্রার্থীরা নানা অভিযোগ দাঁড় করায়।’
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাংগঠনিকভাবে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারায় পরাজিত হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এছাড়া জামায়াতকে পাশে না পাওয়া, সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়ে ক্ষোভ ও বিএনপির নির্বাচনি পথসভায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বেকায়দায় পড়েন বুলবুল। শেষ পর্যন্ত তিনি এই সংকট আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি। মূলত ছয় কারণে এবারের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপি প্রার্থীর।



দলীয় কর্মীদের মাঠে না থাকাকে বুলবুলের বড় ব্যবধানে হারার প্রধান কারণ হিসেবে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ক্রীড়া সংগঠক। তাঁর মতে, ‘রাজনীতিতে জুলুম-নির্যাতন ও কারাবরণ নতুন কিছু নয়। সেই ভয়ে মাঠ ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকার সুযোগ নেই। এই পলায়নপর মানসিকতা বিএনপির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের সমন্বিত প্রচারের সামনে বিএনপি প্রার্থী নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। সেই তুলনায় প্রচারণায় এক ভাগও অগ্রসর হতে পারেননি।’ এছাড়া বড় ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার জন্য তিনি বুলবুলের আচরণকে দায়ী করেছেন। তার মতে, ‘বুলবুলের আচরণে সব সময় উদ্ধত প্রকাশ পেয়েছে, অহংকার প্রকাশ পেয়েছে এবং সময়-কাল বুঝে তিনি কথা বলেননি। এসব কারণে প্রবীণ নাগরিক, কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ ছিল। এগুলো নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে।’
নির্বাচনে বুলবুলের ভরাডুবির বিষয়ে সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট আবু রায়হান মাসুদ বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতির ব্যর্থতাকেও দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অপরিপক্বতার পরিচয় দিয়েছে। আন্দোলনের শক্তি হিসেবে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। এমনকি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করতেও ব্যর্থ হয়েছেন নেতাকর্মীরা। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব সারাদেশের বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পড়েছে। এই হতাশা ও মানসিক দুর্বলতার প্রভাব রাজশাহী সিটি নির্বাচনেও পড়েছে।’ রায়হান বলেন, ‘সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নাগরিকদের সেবার অধিকার উপেক্ষা করে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারে বেশি মনোযোগী ছিলেন। ফলস্বরূপ নাগরিকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আবার তিনি হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে পড়েন।’
সংস্কৃতিকর্মী কামারুল্লাহ সরকার এই প্রতিবেদকের প্রতি প্রশ্ন করে বলেন, ‘বলুন তো বুলবুল মেয়র থাকাকালে সামাজিক, সাংস্কৃতিক কিংবা ক্রীড়া ও সাহিত্যসেবীদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন? তিনি তো জনপ্রতিনিধির মতো আচরণ করেননি। তিনি সব সময় রাজনীতির বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি নাগরিক সম্পর্ক তৈরির কোনও চেষ্টাই করেননি। ফলে তার আমলে সিটি ভবন নাগরিকদের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারেনি। এটা একটা বড় ব্যর্থতা।’
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, ২০১৬ সালে বুলবুল নগর বিএনপির সভাপতি হন। মিজানুর রহমান মিনুকে সরিয়ে তিনি সভাপতি হলে ক্ষোভ দেখান দলের একটি অংশ। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে সেই ক্ষোভ নিরসন হলেও দুই বছরে কোনও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করতে পারেননি বুলবুল। মিজানুর রহমান মিনুর সময় গঠন করা ৩৭ সাংগঠনিক কমিটির নেতারাই ছিলেন এবারের নির্বাচনের দায়িত্বে। ক্ষোভ থেকে ওই নেতারা মেয়রের পরিবর্তে কাউন্সিলরের জন্য মাঠে কাজ করেছেন। এছাড়া মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তফসিল ঘোষণার পর বুলবুল ছুটে গিয়েছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফার কাছে। সে সময় এই দুই নেতার মধ্যে কিছুটা তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। তবে বুলবুল দুঃখ প্রকাশ করলে প্রচারণার মাঠে নামেন নাদিম। তবে তা আন্তরিক ছিল না বলে জানিয়েছেন নাদিমের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা। কমিটি গঠন আর যোগাযোগ না রাখায় মিনু, নাদিম ও মিলন প্রচারে থাকলেও গতবারের নির্বাচনের মতো ছিলেন না। তবে এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা বলেন, ‘বুলবুল মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর যোগাযোগ না রাখলেও তারা আন্তরিকতার সঙ্গেই কাজ করেছেন।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কিছু এলাকায় জামায়াতের শক্ত অবস্থান থাকলেও এবার নিবার্চনি প্রচারে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলটিকে পাশে পায়নি বিএনপি। আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ‘হামলা ও বাধাকে’ এর কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের নেতারা। তবে একে বিএনপি জোটে বিভেদের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। বিএনপির প্রার্থী বুলবুলের সঙ্গে জামায়াতের না থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে ২৬ জুলাই থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ‘মাঠে নামবে’ বলে রাজশাহীতে গিয়ে জানিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। কিন্তু এরপরও জামায়াতকে ধানের শীষের প্রাথীর পক্ষে প্রচারে দেখা যায়নি। কিছুদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম ইমনের এক ফেসবুক স্ট্যাটাসেও রাজশাহীতে দুই দলের মধ্যে বিরোধের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সেলের এই সদস্য সেখানে লেখেন, ‘২০১৩ সালে জামায়াত-শিবির বুলবুল ভাইয়ের নির্বাচনি মাঠে ছিল, অথচ এবার ২০১৮ সালে নেই কেন? এই ব্যথর্তা কার? রাজশাহী বিএনপির ঘাঁটি হওয়া সত্ত্বেও জামায়াতের সঙ্গবিহীন বুলবুল ভাই বিজয়ী হওয়া তো দূরের কথা, ঠিকমতো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’
মামলার জালে আটকা পড়ে দীর্ঘদিন নগর ভবনের বাইরে ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এ সময়ে দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত মেয়র হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িয়ে দেন। এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল সাধারণ মানুষের। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘একদিনের জন্য’ মেয়রের চেয়ারে বসতে পারলে হোল্ডিং ট্যাক্স কমিয়ে দেবেন। কিন্তু সেই কাজ আর করতে পারেননি তিনি। নাগরিকদের সেই ক্ষোভও পড়েছে এবারের ভোটে। এমনটাই মনে করছেন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান। এছাড়া দায়িত্বের শেষ দিকে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন বুলবুল। কর্মচারী ইউনিয়ন প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবার প্রকাশ্যে ভোটের মাঠে কাজ করেছেন লিটনের জন্য। রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল শেখ জানান, মেয়র হিসেবে বুলবুল ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এ কারণে সব কর্মচারী তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
নগরীর ৩০ ভাগ ভোটার তরুণ। এই তরুণদের আকৃষ্ট করতে দায়িত্ব পালনের সময় কোনও উদ্যোগই নেননি বুলবুল। আগের মেয়রের গড়া ওয়াই-ফাই জোনটিও বন্ধ করে দেন দায়িত্ব নেওয়ার পর। যেখানে লিটন তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে তার ইশতেহারে নানা কর্মসূচির কথা বলেছেন, সেখানে বুলবুলের ইশতেহার ছিল তরুণবিমুখ। ভোটের মাঠে তরুণরা এ কারণে তার প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে মনে করেন বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার নির্বাহী প্রধান ফয়জুল্লাহ চৌধুরী।
দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে মতভেদ এবং জামায়াতকে পাশে না পাওয়ায় বুলবুল যতোটা বেকায়দায় পড়েছিলেন, তার চেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েন তার পথসভায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায়। ওই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টুকে আটক করে পুলিশ। মন্টুর একটি ফোনালাপ পুলিশ প্রকাশ করে। তাতে নাটোর ও রাজশাহীর দুই ‘বড় ভাই’ এ ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করেন মন্টু। ওই বড় ভাই হিসেবে আলোচিত হন মিজানুর রহমান মিনু ও রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। এ ঘটনার পর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু আর প্রচারণায় নামেননি। নির্বাচনে ভোটারদের সহানুভূতি পেতে এমনটি ঘটানো হয় বলে ফাঁস হওয়ার পর তা বুলবুলের জন্য বুমেরাং হয়েছে।
তবে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাদের মতভেদ এবং রাজশাহী বিএনপির অনেক নেতা তার পক্ষে কাজ করেননি- নেতাকর্মীদের এমন অভিযোগের জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাসিকের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে বড়। তাই ছোট-খাটো মতভেদ থাকতে পারে। তবে ধানের শীষ প্রতীকে সবাই ঐক্যবদ্ধ ছিল। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে রাজশাহীতে বুলবুলকে কেউ হারাতে পারতো না।’
রাজশাহী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, ‘ভোটের দিন কী হয়েছে সবাই জানে। কিন্তু প্রশাসনের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীর ব্যালট আছে। মেয়র প্রার্থীর ব্যালট নেই। এতে করে ভোটাররা ব্যালট পেপার পাননি। আবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয়ে ও গ্রেফতার আতঙ্কে আমাদের সমর্থক ও নেতাকর্মীরা ঠিকমতো কেন্দ্রে থাকতে পারেনি। কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের নজরে যাতে না পড়ে সেজন্য আমাদের কেউ কেন্দ্রে নির্বাচনি কার্ড কিংবা কোনও কিছু নিজের কাছে রাখেনি। আবার রেজাল্ট ঘোষণার আগেই টেলিভিশনে ঘোষণা হয়ে যায়। একেবারে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। আর জামায়াত নিজের পিঠ বাঁচানোর জন্য ভোট দিয়েছে কি দেয়নি তা আমরা বলতে পারবো না। তবে সুষ্ঠু ভোট হলে রাজশাহীতে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ জিতবে তা ভাবা মুশকিল। কারণ প্রশাসনের জুলুম ও নির্যাতনের পর রাজশাহী এখনও বিএনপির ঘাঁটি।’
রাজশাহী বিএনপির এই নেতা আরও বলেন,‘দুর্বলভাবে বিএনপি করে এমন অনেকে অর্থের জন্য লিটনের পক্ষে কাজ করেছে। কারণ তাদের বিএনপি টাকা দিতে পারেনি। তারা তখন লিটনের হয়ে কাজ করেছে। এ ধরনের অনেকে এবার ধানের শীষে ভোট দেয়নি। আবার পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়েছে। এতে করে জীবন বাঁচানোর জন্য অনেকে কেন্দ্রেই যেতে পারেনি।’
এদিকে পরাজয়ের বিষয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘ভোটাররা ভোট দেওয়ার আগেই মেয়র পদে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও তাদের সমর্থকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুলিশও নৌকায় ভোট দিয়েছে। বিএনপির কোনও এজেন্টকে বুথে থাকতে দেওয়া হয়নি। অনেককে কেন্দ্রেই ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে সরকারদলীয় প্রার্থীর নিজস্ব লোককে প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ১৩৮ ভোটকেন্দ্রে একই কায়দায় ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। সব কেন্দ্রে আগে থেকেই মেয়রের ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখা হয়। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পুলিশ ও ছাত্রলীগের ছেলেরা ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সময়ের আগেই ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
তিনি জানান, বিনোদপুরের ইসলামিয়া কলেজে তিনি নিজে ভোট ডাকাতি ধরেন এবং প্রিজাইডিং অফিসারকে ব্যালট পেপার দেখাতে বললে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। সকাল সাড়ে ১০টার সময় থেকে মেয়রের ব্যালট পেপার শূন্য হয়ে যায়। সেখানকার ভোটাররা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোট দিতে না পেরে ক্ষোভে কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান। তিনি বলেন ‘আমাদের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আতঙ্কে ছিলেন। তারা সাধারণ ভোটারদের বলার সাহস পাননি। কারণ গোয়েন্দা সংস্থা ও আওয়ামী লীগের লোকেরা নজরদারিতে রেখেছিল।’
প্রশাসনের গ্রেফতার আতঙ্কের কারণে বিএনপি নেতারা প্রচারে নামতে পারেনি বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ সঠিক না। অযথা কাউকে গ্রেফতার কিংবা হয়রানি করা হয়নি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকে প্রভাবিতও করা হয়নি। নির্বাচনের আগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে। এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না।’

/ওআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৪৮ হাজার ৮০১ জন, মৃত্যু ৩৮
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৪৮ হাজার ৮০১ জন, মৃত্যু ৩৮
ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৪
ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণাইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৪
গোপনে স্কুলের গাছ বিক্রি, প্রায় কোটি টাকা তছরুপ
গোপনে স্কুলের গাছ বিক্রি, প্রায় কোটি টাকা তছরুপ
ড্র করে নকআউটে পিএসজিকে পেলো মায়ামি 
ড্র করে নকআউটে পিএসজিকে পেলো মায়ামি 
সর্বাধিক পঠিত
প্রধান উপদেষ্টা ও দুদককে উকিল নোটিশ পাঠালেন টিউলিপ
প্রধান উপদেষ্টা ও দুদককে উকিল নোটিশ পাঠালেন টিউলিপ
ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় মন্দা, নেপথ্যের কারণ কী
ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় মন্দা, নেপথ্যের কারণ কী
কাতারের উদ্দেশে ছাড়া ফ্লাইট নামলো ওমানে, আবার ফিরছে ঢাকায়
দোহাগামী বিমানের সব ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণাকাতারের উদ্দেশে ছাড়া ফ্লাইট নামলো ওমানে, আবার ফিরছে ঢাকায়
দেশে প্রথমবারের মতো গুগল পে চালু হচ্ছে আজ, যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে
দেশে প্রথমবারের মতো গুগল পে চালু হচ্ছে আজ, যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে
কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা