X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রাজবাড়ীতে পদ্মার পানিতে ২৭ গ্রাম প্লাবিত, পৌঁছেনি সহায়তা

তানভীর মাহমুদ, রাজবাড়ী
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:০৫আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:১৬

 

 

রাজবাড়ীতে পদ্মার পানিতে ২৭ গ্রাম প্লাবিত, পৌঁছেনি সহায়তা রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে ইতোমধ্যে কালুখালী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার রতনদিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামে প্রবেশ করেছে পদ্মার পানি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব গ্রামে বসবাসরত প্রায় ২০ হাজার মানুষ। তবে তাদের হাতে এখনও কোনও সহযোগিতা পৌঁছেনি বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান- বিশুদ্ধ খাবার পানি, খাবার স্যালাইন ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে দিন পার করছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। গৃহপালিত গরু ছাগলের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়ার চর, লক্সরদিয়া, নারায়ণপুর, সাবারে পাড়া, পশ্চিম হরিণবাড়িয়া, কৃষ্ণ নগর, ভবানিপুর, ভাগলপুর, হরিণাডাঙ্গা, বল্লভপুর, বিজয়নগর, আলোকদিয়া, কলসতলা, রামনগর, খাপুড়ে, কাশিনাথপুর, বহর কালুখালী, কামিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের সাতটা; উত্তর কালুখালী, মাঠ কালুখালী, ঠাকুড় পাড়া, পাড়া বেলগাছী, পুরাতন কালুখালীসহ প্রায় ২৭টি গ্রাম এখন প্লাবিত।

এসব এলাকায় সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নারী ও শিশুরা।

রাজবাড়ীতে পদ্মার পানিতে ২৭ গ্রাম প্লাবিত, পৌঁছেনি সহায়তা

নারায়ণপুর গ্রামের মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রায় ২৫ দিন ধরে এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় বসবাস করছে। বাড়ির পুরুষেরা সাপের ভয়ে পাহারা দিচ্ছে। খাবারের অভাবে আমরা খুব কষ্টে বেঁচে আছি। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারি কোনও ধরনের সাহায্য পাইনি।

ষাটের বেশি বয়সের জাফর শেখ বলেন, ‘অনেক দিন ধরে আমরা হাজার হাজার মানুষ বন্যার পানিতে তলিয়ে আছি। সবাই পানিতে এখন হাবুডুবু খাচ্ছে। কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। কোনও সাহায্য দেয়নি।’

আলোকদিয়া গ্রামের মোঃ. শহীদ বয়াতী বলেন, ‘আমরা বাচ্চাদের এখন নিরাপদে রাখতে দূরে সরিয়ে দিচ্ছি। বড়রা কষ্ট করেই পানির মধ্যেই আছি। বাড়িতে থাকা গরু ছাগলের খাবার নেই। বাড়িতে কোনও ধরনের রান্নার ব্যবস্থা নেই।

রাজবাড়ীতে পদ্মার পানিতে ২৭ গ্রাম প্লাবিত, পৌঁছেনি সহায়তা

কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বিল্লাল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ও রতনদিয়া ইউনিয়নের অনেক গ্রাম পদ্মার পানিতে প্লাবিত থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে কোনও ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয় নাই। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, আমাদের এই নদী ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের ২ কেজি চালের দরকার নাই। অবিলম্বে নদী ভাঙন ঠেকাতে হবে। আমরা চাল আর বিস্কুটের সান্ত্বনা চাই না। আমরা নদী ভাঙন ঠেকানোর জোর দাবি জানাই।

কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহেদী হাচিনা পারভীন নিলুফা জানান, পানিবন্দি এলাকার মানুষগুলো খুব অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। অনেককে সাপে কাটছে। প্রসূতি মায়েরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত। শিশুরা ঠিকমতো বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো বিক্রয় করতে পারছেন না। তাই কালুখালীর নদী ভাঙন ঠেকাতে নদীর বাঁধ বিশেষ প্রয়োজন। আর পানিবন্দি মানুষের সেবায় সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বন্যা এবং ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এরইমধ্যে আমরা ৩৬ টন জিআর চাল বরাদ্দ পেয়েছি। রতনদিয়া ইউনিয়নের এক হাজার এবং কালিকাপুর ইউনিয়নের ৫শ’ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। শিগগিরই এসব পরিবারপ্রতি ২০ কেজি করে চাল ও ঘর নির্মাণের জন্য টিন দেওয়া হবে।’

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বকেয়া ৩৩ হাজার ১০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা: প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বকেয়া ৩৩ হাজার ১০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা: প্রতিমন্ত্রী
যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে কেএনএফ সন্ত্রাসী নিহত
যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে কেএনএফ সন্ত্রাসী নিহত
ব্রিটিশ নিশানায় হামলার হুমকি রাশিয়ার
ব্রিটিশ নিশানায় হামলার হুমকি রাশিয়ার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ
সর্বাধিক পঠিত
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
ছাত্রলীগ সহসভাপতি সাদ্দামের বছরে আয় ২২ লাখ, ব্যাংকে ৩২ লাখ, উপহারের স্বর্ণ ৩০ ভরি
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাচনছাত্রলীগ সহসভাপতি সাদ্দামের বছরে আয় ২২ লাখ, ব্যাংকে ৩২ লাখ, উপহারের স্বর্ণ ৩০ ভরি
বৃষ্টি ও বন্যার কী পূর্বাভাস পাওয়া গেলো?
বৃষ্টি ও বন্যার কী পূর্বাভাস পাওয়া গেলো?
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা