X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের ভয়ে মাস্ক নিয়ে ঘোরেন লোকজন

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
১১ আগস্ট ২০২০, ১৭:১১আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২০, ১৭:১৫

পুলিশের ভয়ে মাস্ক নিয়ে ঘোরেন লোকজন

জয়পুরহাট জেলা শহরে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কিছুটা প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও উপজেলা শহরসহ হাট-বাজার গুলোতে স্বাস্থ্যবিধিতো দূরের কথা, মাস্কও পরছেন না কেউ। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সকাল ৯টায় জয়পুরহাট শহরের জনবহুল পাঁচুরমোড় এলাকায় দেখা যায়, অনেকের মুখে মাস্ক থাকলেও অনেকের মাস্ক থুতনির নিচে। আর অনেককে পকেটে মাস্ক নিয়ে ঘুরতেও দেখা গেছে।

মাস্ক না পড়ার কারণ জানতে চাইলে পথচারী মামুনুর রশীদ জানান, তিনি আক্কেলপুরের বিহারপুর গ্রাম থেকে জয়পুরহাটে কাপড় কিনতে এসেছেন। গ্রামে মাস্ক পড়ার প্রবণতা না থাকায় তিনি মনে করেছেন শহরেও একই অবস্থা। তাই মাস্ক না পড়ে পকেটে রেখেছেন। পকেটে রাখার কারণ হিসেবে জানান, পুলিশের ভয়েই তিনি মাস্ক সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। তবে অত্যন্ত গরমের কারণে মাস্ক না পরে পকেটে রেখেছেন। পুলিশি তৎপরতা নাই দেখে আর মাস্ক পড়ার প্রয়োজন মনে করেননি।

একই কথা জানালেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার হিচমি, কোমরগ্রাম, ধারকী ও ঘনাপাড়া থেকে শহরে আসা কৃষক আমিনুর, বাদশা, সোহেল ও কবিরসহ আরও কয়েকজন। তাদের দাবি, এখন তো আর করোনা আগের মতো অবস্থানে নেই। এনিয়ে প্রশাসনের তৎপরতাও অনেক কমে গেছে। এছাড়া প্রচণ্ড গরমের মধ্যে মাস্ক পড়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়, দম বন্ধ হয়ে আসে। যার জন্য তারা মাস্ক আর পরেন না। তবে পকেটে সব সময় থাকে।

আবার সকাল ১১টায় ক্ষেতলাল উপজেলার ইটাখোলা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতা কারও মুখে মাস্ক নেই। মাঝে মধ্যে দুয়েক জনের মুখে মাস্কের দেখা মিললেও তা ছিল থুতনির নিচে। বাজারের অবস্থা বোঝার উপায় নাই যে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব চলছে।

পুলিশের ভয়ে মাস্ক নিয়ে ঘোরেন লোকজন

এসময় কথা হয় মাছ ব্যবসায়ী স্থানীয় মুন্দাইল গ্রামের শাহজাহান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, 'করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনও ভয় নেই। এখন কেউ মাস্ক ব্যবহার করেন না।'

হাটে সওদা করতে আসা শাখারুঞ্জ গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, 'আগে হাটেও পুলিশ আসতো। পুলিশের ভয়ে মানুষ মাস্ক পড়তো। এখন পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ আসে না। মানুষের ধারণা, করোনা বোধ হয় চলে গেছে। এজন্য গ্রাম-গঞ্জে, হাট-বাজারে মানুষ এখন আর মাস্ক ব্যবহার করেন না। মোট কথা প্রশাসনিক তৎপরতা না থাকার কারণে মানুষ কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।'

জয়পুরহাট শহরের প্রফেসারপাড়া থেকে আসা সরকারি স্কুল শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, 'গোটা হাট ঘুরে কারও মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। করোনা নিয়ে সচেতনতার কোনও বালাই নাই তাদের মধ্যে।'

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএফএম আবু সুফিয়ান বলেন, 'আজকেও ওই হাটে মাস্ক বিতরণ করতে গিয়ে কাউকে দিতে পারিনি। কারণ সবার পকেটেই মাস্ক আছে। আমাকে দেখে তারা পকেট থেকে মাস্ক বের করে মুখে দিচ্ছে। এখন মানুষ যদি নিজে থেকে সচেতন না হন, তাহলে আমাদের করার কী আছে।'

জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, 'স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য এখন শহরে সেনাবাহিনীর টহল চলমান আছে। আগামীকাল থেকে আমি নিজে পুলিশ নিয়ে মাঠে কাজ করবো।'

জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, 'করোনা প্রতিরোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে মানুষ মাস্ক পড়ছেন না। জনে জনে তো আর সচেতন করা সম্ভব নয়। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি।'

প্রসঙ্গত, জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮১৭ জন। আর করোনায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের।

 

 

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
৩৫তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসবজন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ