X
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২

পুলিশের ভয়ে মাস্ক নিয়ে ঘোরেন লোকজন

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
১১ আগস্ট ২০২০, ১৭:১১আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২০, ১৭:১৫

পুলিশের ভয়ে মাস্ক নিয়ে ঘোরেন লোকজন

জয়পুরহাট জেলা শহরে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কিছুটা প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও উপজেলা শহরসহ হাট-বাজার গুলোতে স্বাস্থ্যবিধিতো দূরের কথা, মাস্কও পরছেন না কেউ। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সকাল ৯টায় জয়পুরহাট শহরের জনবহুল পাঁচুরমোড় এলাকায় দেখা যায়, অনেকের মুখে মাস্ক থাকলেও অনেকের মাস্ক থুতনির নিচে। আর অনেককে পকেটে মাস্ক নিয়ে ঘুরতেও দেখা গেছে।

মাস্ক না পড়ার কারণ জানতে চাইলে পথচারী মামুনুর রশীদ জানান, তিনি আক্কেলপুরের বিহারপুর গ্রাম থেকে জয়পুরহাটে কাপড় কিনতে এসেছেন। গ্রামে মাস্ক পড়ার প্রবণতা না থাকায় তিনি মনে করেছেন শহরেও একই অবস্থা। তাই মাস্ক না পড়ে পকেটে রেখেছেন। পকেটে রাখার কারণ হিসেবে জানান, পুলিশের ভয়েই তিনি মাস্ক সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। তবে অত্যন্ত গরমের কারণে মাস্ক না পরে পকেটে রেখেছেন। পুলিশি তৎপরতা নাই দেখে আর মাস্ক পড়ার প্রয়োজন মনে করেননি।

একই কথা জানালেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার হিচমি, কোমরগ্রাম, ধারকী ও ঘনাপাড়া থেকে শহরে আসা কৃষক আমিনুর, বাদশা, সোহেল ও কবিরসহ আরও কয়েকজন। তাদের দাবি, এখন তো আর করোনা আগের মতো অবস্থানে নেই। এনিয়ে প্রশাসনের তৎপরতাও অনেক কমে গেছে। এছাড়া প্রচণ্ড গরমের মধ্যে মাস্ক পড়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়, দম বন্ধ হয়ে আসে। যার জন্য তারা মাস্ক আর পরেন না। তবে পকেটে সব সময় থাকে।

আবার সকাল ১১টায় ক্ষেতলাল উপজেলার ইটাখোলা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতা কারও মুখে মাস্ক নেই। মাঝে মধ্যে দুয়েক জনের মুখে মাস্কের দেখা মিললেও তা ছিল থুতনির নিচে। বাজারের অবস্থা বোঝার উপায় নাই যে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব চলছে।

পুলিশের ভয়ে মাস্ক নিয়ে ঘোরেন লোকজন

এসময় কথা হয় মাছ ব্যবসায়ী স্থানীয় মুন্দাইল গ্রামের শাহজাহান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, 'করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনও ভয় নেই। এখন কেউ মাস্ক ব্যবহার করেন না।'

হাটে সওদা করতে আসা শাখারুঞ্জ গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, 'আগে হাটেও পুলিশ আসতো। পুলিশের ভয়ে মানুষ মাস্ক পড়তো। এখন পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ আসে না। মানুষের ধারণা, করোনা বোধ হয় চলে গেছে। এজন্য গ্রাম-গঞ্জে, হাট-বাজারে মানুষ এখন আর মাস্ক ব্যবহার করেন না। মোট কথা প্রশাসনিক তৎপরতা না থাকার কারণে মানুষ কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।'

জয়পুরহাট শহরের প্রফেসারপাড়া থেকে আসা সরকারি স্কুল শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, 'গোটা হাট ঘুরে কারও মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। করোনা নিয়ে সচেতনতার কোনও বালাই নাই তাদের মধ্যে।'

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএফএম আবু সুফিয়ান বলেন, 'আজকেও ওই হাটে মাস্ক বিতরণ করতে গিয়ে কাউকে দিতে পারিনি। কারণ সবার পকেটেই মাস্ক আছে। আমাকে দেখে তারা পকেট থেকে মাস্ক বের করে মুখে দিচ্ছে। এখন মানুষ যদি নিজে থেকে সচেতন না হন, তাহলে আমাদের করার কী আছে।'

জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, 'স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য এখন শহরে সেনাবাহিনীর টহল চলমান আছে। আগামীকাল থেকে আমি নিজে পুলিশ নিয়ে মাঠে কাজ করবো।'

জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, 'করোনা প্রতিরোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে মানুষ মাস্ক পড়ছেন না। জনে জনে তো আর সচেতন করা সম্ভব নয়। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি।'

প্রসঙ্গত, জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮১৭ জন। আর করোনায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের।

 

 

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মব সন্ত্রাস ছেড়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জামায়াতের
মব সন্ত্রাস ছেড়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জামায়াতের
‘মেসি ফুটবল খেলে খুশি’
‘মেসি ফুটবল খেলে খুশি’
রাউজানে প্রকাশ্যে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা
রাউজানে প্রকাশ্যে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা
৯০তম জন্মদিনে আরও ৪০ বছর বাঁচতে চান দালাই লামা
৯০তম জন্মদিনে আরও ৪০ বছর বাঁচতে চান দালাই লামা
সর্বাধিক পঠিত
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল