পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে নতুন চাকরিতে যোগদান করার কথা ছিল রাহাত খানের। কিন্তু চাকরি কপালে সইলো না তার। যোগদানের একদিন আগেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন রাহাত খান (২৫)।
আজ রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে হাসিমুখে যাবেন রাহাত, করবেন নতুন চাকরিতে যোগদান এমনটাই আশা ছিল স্বজনদের। একদিন আগে সবার আশা ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। এখন রাহাত খানের দাদা ও মামা বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা তার স্বজনরা।
জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে বাউফল-দুমকি সড়কের হিরু মিয়ার ব্রিজ এলাকায় গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন রাহাত । রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
রাহাত পটুয়াখালী পৌরসভার কলেরপুকুর পাড় এলাকার মো. নান্নু খানের ছেলে। রাহাতের বাবা-মা তাকে ছোট রেখেই মারা যায় । একমাত্র বোনকে নিয়েই পটুয়াখালীতে বসবাস করতেন। কয়েকদিন আগে রাহাত বাউফলে তার মামা ওহাব মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসেন।
স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পায়রা বন্দরে রাহাতের চাকরি হয়েছে। আজ রবিবার তার কর্মস্থলে প্রথম যোগদানের কথা ছিল। এজন্য প্রস্তুতিও নিয়েছিল রাহাত। চাকরিতে যোগদান করলে ব্যস্ত জীবন শুরু হয়ে যাবে। তাই যোগদানের পূর্বে মামা বাড়ি বেড়াতে যায় সে। সেখান থেকে ফিরেই চাকরিতে যোগদান করার কথা ছিল তার। তবে এর আগে একটু বিনোদনের আশায় শুক্রবার রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে রাহাত ও তার মামাতো ভাই টিপু মিয়া বগা এলাকায় একটি মাছের ঘেরে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করতে যাচ্ছিলেন। রাহাত নিজেই মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। রাত ১০ টার দিকে হিরু মিয়ার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। ওই সময় রাহাত ও টিপু গুরুতর আহত হয়। কাছে থাকা লোকজন তাদের দুজনকে উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাহাত মারা যায়।
বাউফল সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো জসিম উদ্দিন বলেন, এই ছেলেটার বাবা-মা মারা গেছে আগেই। কষ্ট করে লেখাপড়া করে মানুষ হয়েছে, নতুন চাকরি হয়েছে। এই অকাল মৃত্যু মেনে নেওয়া অনেক কষ্টের।