X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ফুলবাড়ী হানাদারমুক্ত দিবস

দিনাজপুর প্রতিনিধি
০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৫১আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৫৩

আজ ফুলবাড়ী হানাদারমুক্ত দিবস

আজ ৪ ডিসেম্বর। দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে প্রাণপণ যুদ্ধ করে হানাদার বাহিনীকে ফুলবাড়ী থেকে বিতাড়িত করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। প্রতি বছর এই দিনটিকে ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে আসছে এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, এর আগে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ফুলবাড়ীতে গঠিত হয় সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি। ২৪ মার্চ পর্যন্ত ফুলবাড়ীতে শান্তি বিরাজ ছিল। ২৫ মার্চ গভীর রাতে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, রংপুর ও বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী নিরীহ জনসাধারনের ওপর হামলা করে হত্যা করে, অসংখ্য নিরীহ বাঙালিকে। পরের দিন ২৬ মার্চ এই হত্যাযজ্ঞের খবর বিভিন্ন এলাকা থেকে রেডিও টিভিতে জানতে পেরে ফুলবাড়ীতে বাঙালি জনগোষ্টির মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ওই দিন সকাল থেকে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে ফুলবাড়ী শহরে বের করা হয় প্রতিবাদ মিছিল। এরপর ওই মিছিলে বাধা, হামলা ও কিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে অবাঙালিরা। সেই প্রতিবাদে বাঙালি জনগোষ্ঠী একত্র হয়ে পাকিস্তানপন্থী কয়েকজনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। শুরু হয়ে যায় বিশৃঙ্খলা। এপ্রিল মাসের ২ তারিখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ফুলবাড়িকে নিজেদের দখলে নেয়। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পর ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় যৌথ বাহিনী উপজেলার বেতদিঘী, কাজিয়াল, এলুয়াড়ী, জলপাইতলী, পানিকাটা, রুদ্রানী, আমড়া ও রানি নগর এলাকার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চর্তুমুখী আক্রমণ শুরু করে। এসময় মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর হাতে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে হানাদার বাহিনী ফুলবাড়ী শহরে তাদের আগমন রোধ করার পরিকল্পনা করে। ওই দিন বিকাল সাড়ে ৩টায় ফুলবাড়ীর পৌর শহরের পশ্চিম পার্শ্বে ছোট যমুনা নদীর ওপর লোহার ব্রিজটির পূর্বাংশ শক্তিশালী ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। ব্রিজটি এখনও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে আছে। ব্রিজটি উড়িয়ে দেওয়ায় মিত্রবাহিনীর ফুলবাড়ী শহরের প্রবেশ করতে বিলম্ব হয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হানাদার বাহিনী ও
তাদের সহযোগী অবাঙালীরা বিশেষ ট্রেন যোগে সৈয়দপুরে পালিয়ে যায়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফুলবাড়ীতে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহীনী। এসময় তারা ফুলবাড়ীকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করে পৌর শহরের সিএমবি ডাকবাংলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ও বিজয় মিছিল বের করেন।

ফুলবাড়ী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এছার উদ্দিন বলেন, '৪ ডিসেম্বর বিকালে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ফুলবাড়ী ত্যাগ করে। এরপর তারা আর ফুলবাড়ীতে ফেরেনি। অবশ্য তাদের কিছু মাইন পুতে রাখা ছিল। সেই মাইনে বিস্ফোরিত হয়ে ৩ জন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্য নিহত হন।'



 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
প্রাতিষ্ঠানিক কল-কারখানায় কোনও শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
প্রাতিষ্ঠানিক কল-কারখানায় কোনও শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
বিশৃঙ্খলার কারণে তিন খেলোয়াড় ৫ বছর নিষিদ্ধ 
বিশৃঙ্খলার কারণে তিন খেলোয়াড় ৫ বছর নিষিদ্ধ 
চুনা পাথর নিয়ে দেশে আসছে এমভি আবদুল্লাহ, পৌঁছাবে কোনদিন?
চুনা পাথর নিয়ে দেশে আসছে এমভি আবদুল্লাহ, পৌঁছাবে কোনদিন?
ভারতকে ১২০ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
ভারতকে ১২০ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
আওয়ামী লীগ নেতাকে হারিয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রউফ জয়ী
আওয়ামী লীগ নেতাকে হারিয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রউফ জয়ী
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও