ভারত থেকে গম রফতানি বন্ধের ঘোষণায় গমের দাম হঠাৎ বাড়তে থাকে। এ জন্য আটা ও ময়দার দাম কেজিতে আট থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মিল মালিকরা গম কেনা কমিয়ে দেন, অনেকে কেনা বন্ধও রেখেছেন। এ কারণে গম ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন। ফলে পাইকারি বাজারে আটা-ময়দার দাম বস্তাপ্রতি ১৫০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। তবে খুচরা বাজারে এর কোনও প্রভাব পড়েনি। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গমের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমেছে। ফলে পাইকারি বাজারে আটা-ময়দার দামও কমেছে। বস্তাপ্রতি আটার দাম কমেছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আর ময়দার ক্ষেত্রে কমেছে ৫০ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে সেই আগের বাড়তি দামে আটা-ময়দা বিক্রি হচ্ছে। এতে দাম কমার সুবিধা পাচ্ছেন না ভোক্তারা।
নিতাইগঞ্জের মেসার্স নিউ শীতল ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী আমিনুর রহমান অপু বলেন, ‘বস্তাপ্রতি আটার দাম একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকা কমেছে। মানভেদে আটার দাম কম-বেশি হয়। ভালো মানের আটা ২০০০ আর নিম্নমানের ১৮০০ থেকে ১৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও ভালো মানের আটা ২২০০ এবং নিম্নমানের আটা ১৯০০ থেকে ১৯৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।’
আটার দাম কমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গমের দাম কমার ফলে আটার দাম কমেছে। গত তিন দিনের ব্যবধানে গমের দাম ১৬৫০ টাকা থেকে কমে ১৪৮০ টাকা মণ হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ আটা-ময়দা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মেসার্স দিবা ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ময়দার দাম আশানুরূপ কমেনি। কানাডার গমের দাম মণপ্রতি ৫০ টাকা কমেছে, এ কারণে কিনিনি। আগের গম দিয়ে মিলে ময়দা উৎপাদন করছি। ময়দা এখন ২৬০০ থেকে ২৬১০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে আটা উৎপাদনের গমের দাম কমেছে।’
নিতাইগঞ্জে আটা-ময়দার পাইকারি দোকান মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘আটা-ময়দার দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। আটা বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা কমে এখন ২১০০ টাকা হয়েছে। আর ময়দার দাম বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা কমে এখন ২৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
‘মেসার্স নূরজাহান ট্রেডার্স’ দোকানের স্বত্বাধিকারী শাহ আলম হোসেন বলেন, ‘আটার দাম বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমেছে। ভালো মানের আটা ৫০ কেজির বস্তা ১০০ টাকা কমে ২১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নিম্নমানের আটা বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা কমে ১৯০০ টাকা হয়েছে।’
এদিকে, পাইকারি বাজারে আটা-ময়দার দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর কোনও প্রভাব পড়েনি। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। চাষাড়া প্রেসিডেন্ট রোডের দোকানি আল আমিন বলেন, ‘আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। আটা ৫০ টাকা এবং ময়দা (প্যাকেট) ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।’
বন্দর উপজেলার বাবুপাড়া এলাকার দোকানি রতন মিয়া বলেন, ‘আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। আটা ৫০ টাকা আর ময়দা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা বিক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘খুচরা বাজারে কোনও পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা সহজে কমে না।’