যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রাশিদা খাতুনকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়। সোমবার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক নিলুফার শিরীন এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসমান আলী পলাতক রয়েছেন। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার দিঘড়ি গ্রামের আককাস আলীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল।
আদালত সূত্র জানায়, ঝিকরগাছা উপজেলার সোনাকুড় গ্রামের সন্তোষ আলীর মেয়ের রাশিদা খাতুনের সঙ্গে ওসমানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জানাজানি হয়, ওসমান বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে আসক্ত এবং তার একাধিক বিয়ে করেছেন। রাশিদা-ওসমানের সংসারে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের জন্মের পর থেকে ওসমান যৌতুকের দাবিতে রাশিদার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকেন। বেশ কয়েকবার হত্যারও চেষ্টা করেন।
সর্বশেষ ২০০৪ সালের ৭ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার পর কয়েক ব্যক্তিকে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর ওপর ভয়াবহ নির্যাতন করে হত্যা করেন ওসমান। পরদিন সকালে রাশিদার মৃত্যুর খবর শুনে পরিবারের লোকজন সেখানে যান। এলাকাবাসী হত্যার বিষয়টি জানালে ওসমান বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি ঝিকরগাছা থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মামলায় দিঘড়ি গ্রামের সাবুলের ছেলে কুতুব আলী, রজব আলীর ছেলে ফজর আলী, আবদুল খালেকের ছেলে সাদেক আলী এবং একই গ্রামের কালুকে আসামি করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারা প্রথমে রাশিদাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং পরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
মামলাটি ঝিকরগাছা থানার এসআই হাবিবুর রহমান তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে অপর চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়।