বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং ১০ ডিসেম্বর গণজমায়েত সফল করার সমর্থনে মিছিল, চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকার সাভারে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আলী। তিনি সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি।
রবিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা।
এর আগে গতকাল রবিবার রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটের খোয়ার আঘাতে পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মামলার আসামিরা হলেন– সাভারের আমিনবাজারের হিজলা গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কপিল উদ্দিন (৫৬), সাভারের ছায়াবিথী এলাকার হাজী শামসুল হকের ছেলে ও ঢাকা জেলা বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাভারের সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদ আলম (৪৫), ব্যাংক কলোনি এলাকার গোলাম খন্দকারের ছেলে ও সাভার পৌর-বিএনপির সভাপতি খন্দকার শাহ মাইনুল হোসেন রিন্টু (৪৯), অমরপুর গ্রামের জাগির আলি চৌকিদারের ছেলে ও কপিল উদ্দিনের সহযোগী রমিজ (৫৫), নামাগেন্ডা এলাকার ইস্রাফিলের ছেলে ও কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফ (২৮), রাজাঘাট এলাকার শহর আলী সরদারের ছেলে ও তেঁতুলঝোড়া শ্রমিক দলের সভাপতি কুটি (৪৫), ঝাউচরের ইনতাজ আলীর ছেলে ও তেতুলঝোড়া ইউনিয়ন বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন (৪৫), রাজফুলবাড়িয়া এলাকার মনির উদ্দিনের ছেলে ও তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন (৫০), তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভরারীর ওয়াদুদ খানের ছেলে আব্বাস খান (৪০), ভাকুর্তা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আজমত আলীর ছেলে কদম আলী(৪০), একই ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও ফজর আলীর ছেলে আইনুদ্দিন মাদবর (৫০), ঢাকা জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তালাত মাহমুদ (৪২), সাভার পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির (৫৫), সাভার পৌর যুবদলের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী (৬২), ভরারীর ইউপি সদস্য মৃত ওয়াজেদ খানের ছেলে আব্দুর রহমান খান ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওবায়দুর রহমান অভি (৪৭), অমরপুরের মৃত মুসা মোল্লার ছেলে ও ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আশেক আলী মোল্লা (৬০), বিএনপির সদস্য আজিজুর রহমান (৪৫), সাভার উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফুদ্দিন (৫৫), সাভার পৌর-বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদির (৪২), সাভার বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জু মোল্লা (৪০), সাভার থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিনহাজ উদ্দিন বাদল, সাভার থানা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা (৫০), সাভার উপজেলা যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন মোল্লা (৪৭), বনগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার মোস্তাক আহমেদ রনি, আব্দুল্লাহ আবুল খায়ের (৫৫), যুগ্ম আহ্বায়ক সাভার উপজেলা বিএনপি, থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার মণ্ডল (৪৫), শ্রমিকদল নেতা হবি (৩৮), জেলা বিএনপির সংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল আহসান রাশেদ (৪৫) এবং ঢাকা জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খানসহ আরও অজ্ঞাত বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন– সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম, কনস্টেবল নজরুল, হেমন্ত ও আবুল হাসান। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপিও এর সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং আগামী ১০ ডিসেম্বর গণজমায়েত সফল করার সমর্থনে মিছিল বের করা হয়। একই সঙ্গে তারা চলাচলের সড়ক বন্ধ করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করছিলেন। এ সময় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পুলিশকে লক্ষ করে ইঠ-পাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে তারা ৮টি ককটেল নিক্ষেপ করেন।এর মধ্যে তিনটি কটকটেল বিস্ফোরণ হলেও বাকি পাঁচটি রয়েছে তাজা। সেগুলো উদ্ধার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এই মামলায় মোহাম্মদ আলী পাঠান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের যুবদলের সভাপতি। তাকে আগামীকাল সোমবার আদালতে পাঠানো হবে। এ ছাড়া এই ঘটনায় সাভার মডেল থানার এস আইসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচটি ককটেল।’
তিনি জানান, এ ছাড়া গত ৩০ নভেম্বর বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় সাভার পৌর বিএনপির সভাপতি সোহরাব হোসেন (৫৫), সাভার বিএনপি নেতা বাহরাইন বাদশা (৪৩), তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা মেহেদী হাসান (২৭), তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজম খান (৫৫), সাভার পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন হাঞ্জালা (৩৭), হাবিবুর রহমান হাবি (৫০), সাভার ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোশাররফ হোসেনকে (৫৭) গ্রেফতার করে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
