লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে রহমতখালী খালের ওপর সেতু ধসে পড়ায় ছয় দিন ধরে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ পাঁচ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।
শনিবার বিকালে হঠাৎ পানির তীব্র স্রোতে সেতুটি ধসে পড়ে। সেদিন থেকে চন্দ্রগঞ্জ-চরশাহী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্-নির্বাচনি পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ প্রিয়ব্রত চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সোমবার কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রাক্-নির্বাচনি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভেঙে পড়ায় পরীক্ষাসহ শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ব্রিজ পার হয়ে কলেজে আসতে হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা না হলে শিক্ষার্থীদের কলেজে আসা-যাওয়া বন্ধ রাখতে হবে আমাদের।’
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন কলেজ সংলগ্ন সেতুটি নির্মাণ করে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতর। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ ফুট ও প্রস্থ ১০ ফুট। এই সেতু দিয়ে শেখপুর, রাজাপুর, রামকৃষ্ণপুর, চরশাহী ইউনিয়ন হয়ে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর-চৌমুহনী সড়কের সঙ্গে এসব এলাকার প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থীসহ লক্ষাধিক মানুষের প্রতিনিয়ত যাতায়াত ছিল।
স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের অনেক খাল-বিল ও জলাশয়ের বর্ষার পানি এখনও পুরোপুরি নামেনি। ওই পানি নামছে রহমতখালী খাল দিয়ে। এতে খালে স্রোত সৃষ্টি হওয়ায় সেতুটি ধসে পড়ে।
চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘সেতুটি অনেকটাই নড়বড়ে ছিল। মেরামতের জন্য বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগে জানানো হয়েছে। ভেঙে যাওয়ার কারণে সেতু দিয়ে ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে।’
সেতুসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা শাকিল হোসেন বলেন, ‘সেতুটি দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করেন। আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও গাড়ি এখান দিয়ে চলাচল করে। সেতু দিয়ে চলাচল বন্ধ হওয়ায় সবাই দুর্ভোগে পড়েছেন।’
লক্ষ্মীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইকরামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সেতু ভেঙে দেবে যাওয়ায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রহমতখালী খালে তীব্র স্রোতে সেতুটি ধসে পড়ে। জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ওই স্থানে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি নতুন সেতু নির্মাণ ও বিকল্প সেতুর ব্যবস্থা করতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’