বগুড়া শহরের সাতমাথা, টেম্পল রোড ও কবি নজরুল ইসলাম সড়কে আওয়ামী লীগ, জাসদ (ইনু) ও জাতীয় পার্টির (জাপা) জেলা এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুর ও আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস, সাবেক এমপি সাহাদারা মান্নানের বাবার বাড়ি এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বাড়িতেও হামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত এসব হামলা চলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিপুলসংখ্যক তরুণ শহরের আদালতপাড়ায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১২তলা ভবনের নিচতলায় শেখ হাসিনার নামফলক হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলেন। রাত ৮টার দিকে স্টেশন রোড, নবাববাড়ি সড়ক দিয়ে দুই শতাধিক ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শহরের সাতমাথা সংলগ্ন টেম্পল সড়কে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আসে। তারা ভাঙচুর করে ওই কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তারা আওয়ামী লীগ অফিস সংলগ্ন জেলা জাসদ ও শ্রমিক জোট কার্যালয় ভাঙচুর করে। পরে তারা অফিসের ভেতর থেকে আসবাবপত্র বাইরে বের করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কে জেলা জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন দেয়।
হামলাকারীরা সাতমাথায় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এতে পুরো সাতমাথা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। আশপাশের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। লোকজন ও যানবাহন ভয়ে ছুটোছুটি করে। এসব হামলা চলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও সদস্যকে দেখা যায়নি। এ হামলার ব্যাপারে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, জাসদ ও জাতীয় পার্টির কোনও নেতা বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ভাঙচুরে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। বগুড়ার কৃতি সন্তান পিনাকী ভট্টাচার্য্য আওয়ামী লীগের সব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশে এসব করা হচ্ছে। ঢাকার ৩২ নম্বর দিয়ে শুরু হয়েছে। আমার সোনার বাংলায় খুনি হাসিনার ঠাঁই নেই। তাদের সব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।’
এদিকে, হামলাকারীরা সন্ধ্যার দিকে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আসবাবপত্রে আগুন দেয়। এরপর তারা বালুয়া ইউনিয়নের পাতিলাকুড়া গ্রামে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং বগুড়া-১ আসনের সাবেক এমপি সাহাদারা মান্নানের বাবা শাহাদত জামানের বাড়িতে হামলা চালায়।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, তিনি এমন কোনও খবর পাননি। এরপর থেকে তারা ফোন রিসিভ করেননি।