রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুদক আইনে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আটটি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, তার মালিকানাধীন বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্রসহ ৩১৩০.৭৩ একর জমি এবং আনুমানিক ৯ কোটি টাকা মূল্যের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে।
রবিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক রুবেল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের নির্দেশে নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের সব সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে।
এর আগে দুদকের পক্ষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক রুবেল হোসেন রংপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ ফজলে খোদা মো. নাজিরের আদালতে নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের সব অস্থাবর-স্থাবর সম্পদ ক্রোক করা, সেই সঙ্গে তার নামে আটটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আবেদন জানালে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
দুদক কর্মকর্তা রুবেল হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ নেতা নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের মালিকানাধীন পীরগঞ্জে ৩১৩০.৭৩ একর জমির ওপর ‘আনন্দনগর’ নামে বিশাল পিকনিক স্পট কাম বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে আটটি হিসাবে অনেক টাকা গচ্ছিত আছে। তার নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক আইনে মামলা রয়েছে। যার নম্বর নম্বর ২৬/২০২০ইং। ওই পিকনিক স্পট কাম বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্র আনন্দনগর ক্রোক করে পীরগঞ্জ থানার ওসি এমএ ফারুককে রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি ওই সম্পদের জিম্মাদার থাকবেন।
দুদক কর্মকর্তা রুবেল হোসেন আরও জানান, ক্রোকের সম্পত্তি কোনোভাবে অন্যত্র স্থানান্তর এবং হস্তান্তর করতে না পারে এবং ওই সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কোনও প্রকার লেনদেন বা ওই সম্পত্তিকে কোনোভাবে দায়মুক্ত করা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করেছেন আদালত।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে রিসিভার নিয়োগ দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি আইনগতভাবে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
আসামি নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, উল্টো আসামি প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছেন এবং ওয়াজ মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন– এমন প্রশ্নের উত্তরে ওসি জানান, অল্প কিছুদিন হলো থানায় এসেছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা হওয়ার বিষয়টি তার জানা ছিল না। খোঁজ করে দেখবেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় রংপুর থেকে ২০২০ সালে সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের উৎস বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমান মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।