জুলাই-আগস্টের গণঅভুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ভাঙচুর ও তাণ্ডবের ঘটনার দীর্ঘ নয় মাস পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় মামলাটি দায়ের করেন বেরোবির রেজিস্ট্রার হারুন অর রশীদ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার ওসি শাহ আলম সরদার।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ বেরোবির সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান শামীমকে। এ ছাড়াও শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তির নামও উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন– বেরোবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদুল হাসান, দফতর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার ওরফে টগর , সহ-সভাপতি বিধান বর্মণ, সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বি, ছাত্রলীগ নেতা তানভীর আহমেদ তানভীর, মমিনুল হক, আখতার হোসেন, শাহিন ইসলাম, সাব্বির ওরফে রিয়ান, শাখাওয়াত হোসেন, মৃত্যুঞ্জয় রায়, মোশারাফ হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, রিফাত হোসেন, ফরহাদ হোসেন, আবির শাহারিয়ার অনীক, আরিফুজ্জামান ইমন, গাজিউর রহমান, ইমরান চৌধুরী, সিজান আহমেদ, আরাফাত রহমান, সইবুল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল রায়হানসহ অন্যরা।
এ ছাড়াও বেরোবির গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমান, লোক প্রশাসন বিভাগের আসাদ মন্ডল, সহকারী রেজিস্ট্রার হাফিজার রহমান তুফান, কর্মচারী আমির হোসেন, সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ, উপ রেজিস্ট্রার তাওহিদুল ইসলাম, সহকারী রেজিস্ট্রার রফিকুল হাসান রাসেল, মাস্টার রোলের কর্মচারী নুর নবীকে আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রংপুরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে প্রথম শহীদ হন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ১৬ জুলাই আন্দোলনে সম্মুখ সারির এই যোদ্ধাকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। শহীদ আবু সাঈদের দুই হাত প্রসারিত করে গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনা দেশে-বিদেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকত আলী জানান, ৫ আগস্টের পর বেরোবিতে আন্দোলন দমন ও তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় জড়িদের শনাক্ত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কালে ওই সময়ের ভিডিও ও ছবিসহ আনুষঙ্গিক প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে ৭১ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে নিশ্চিত হয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সবকিছু পর্যালোচনা করে ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তির নামে বুধবার মামলা দায়ের করা হয়।’