‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। যা কৃষি খাতের জন্য বড় হুমকিস্বরূপ।’ ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচকরা এ কথা বলেন। বুধবার সকালে খুলনা কৃষি তথ্য সার্ভিস আঞ্চলিক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি খুলনা আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন অফিসার বিভাস চন্দ্র সাহা। কৃষি তথ্য সার্ভিস খামারবাড়ি ঢাকার প্রধান তথ্য অফিসার কৃষিবিদ বি এম রাশেদুল আলমের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ড. এস এম ফেরদৌস।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার শারমিনা শামিম। সেমিনারে খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ দফতরের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, খুলনা কৃষি অঞ্চল ক্লাইমেট স্মার্ট প্রকল্পের পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনিসহ জেলার কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরে অতিথিরা বলেন, ‘দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষিক্ষেত্র ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছর প্রায় ৬৮ হেক্টর আবাদি জমি অনাবাদিতে পরিণত হচ্ছে। তাই কৃষির পাশাপাশি মৎস্য চাষ, পশু পালন এবং অন্যান্য বিকল্প জীবিকার সুযোগ তৈরি করতে হবে। টেকনোলজির ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করতে হবে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে ডাটাবেজ তৈরি করা দরকার। যেন কৃষকরা সহজে বুঝতে পারেন কোন পণ্য বেশি উৎপাদন করতে হবে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে কৃষিজমি রক্ষার জন্য টেকসই উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।’
তারা আরও বলেন, ‘কৃষিতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আরও এগিয়ে নিতে হলে নতুন নতুন টেকনোলজি আবিষ্কার করা প্রয়োজন।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে উপস্থাপক জানান, ২০৫০ সালের মধ্যে উপকূলীয় কৃষির উৎপাদন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন কমবে ৮ শতাংশ এবং গমের উৎপাদন কমবে ৩২ শতাংশ।
খুলনা কৃষি তথ্য সার্ভিস আয়োজিত এ সেমিনারে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার কৃষি দফতরের আওতাধীন কর্মকর্তা ও সরকারি দফতরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে ‘কৃষি কথা’র গ্রাহক করতে সক্ষম খুলনা বিভাগের ছয়টি উপজেলার ছয় জন উপজেলা কৃষি অফিসারকে সনদপত্র ও দুই জনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।