X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

সবুজ পাতার ফাঁকে ‘কৃষকের হাসি’

আবদুল কাইউম, পটুয়াখালী
০৫ মার্চ ২০২১, ১৭:৪২আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২১, ১৮:১০

মাঘ মাসের শুরুতেই দক্ষিণাঞ্চলে চাষিরা শুরু করেন তরমুজের আবাদ। মৌসুমের শুরু থেকেই অনুকূল আবহাওয়া এবং রোগবালাইয়ের প্রকোপ না থাকায় এবার তরমুজের বাম্পার ফলনও পাওয়া গেছে। জমিতে গিয়ে দেখা যায় পাতার ফাঁক গলে যেন চওড়া হচ্ছে ‘কৃষকের হাসি’। এবার ভালো মূল্য পাওয়ায় বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখার আশা করছেন তারা।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলার বেশ কিছু তরমুজের জমিতে গিয়ে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধুই তরমুজ। ভরা মৌসুম চলায় পরিচর্যা, কাটা, পরিবহন ও বাজারজাত করা নিয়ে চাষিদের ব্যস্ততা। এ কারণে জমি, পথ-ঘাট, ট্রলার সব জায়গায় শুধু তরমুজ আর তরমুজ।

কলাপড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে দুই হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় তিন হাজার চাষি তরমুজ আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি হেক্টরে ৩০ মেট্রিকটন ফলন পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।

সবুজ পাতার ফাঁকে ‘কৃষকের হাসি’ কলাপড়া কাওয়ারচর গ্রামের তরমুজ চাষি বশার শিকদার বলেন, ‘কলাপাড়ার তরমুজ খেতে সুস্বাদু, আকারে বড় ও রং লাল টুকটুকে হওয়ায় রাজধানী ঢাকার ক্রেতাদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এ কারণে এখানকার তরমুজের চাহিদা বেশি। কদর বেশি।’

তবে চাষের উপযোগী জমি কমে যাওয়ায় তরমুজের জন্য বিখ্যাত উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের অনেক কৃষক এবার বেকার সময় পার করছেন। অবশ্য এ বছর জমির পরিমাণে তরমুজের আবাদ কম হলেও বিগত বছরের চেয়ে ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি চাষিদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সবুজ রঙের মধ্যে দোল খাচ্ছে তরমুজের পাতা। আবহাওয়া ভালো থাকায় তরমুজের ফলের রঙ বদলে গেছে। পেয়েছে নতুন যৌবন। কুয়াকাটা, ধুলাসার, বাবলাতলা, নয়াপাড়া, কলাপাড়া, ধানখালী, বালীয়াতলী ঘাটসহ সর্বত্রই তরমুজের ছড়াছড়ি। কেউ ট্রলি থেকে তরমুজ নামিয়ে ঘাটে স্তুপ করছে। কেউবা ট্রলারে তরমুজ বোঝাই করছেন। আবার বাজারজাতের অংশ হিসেবে ওইসব তরমুজ বোঝাই নৌযান প্রতিদিন উপজেলার আন্দারমানিক এবং রামনাবাদ নদী হয়ে ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলার অভিমুখে ছুটে যাচ্ছে।

কৃষকেরা জানান, এ আবহাওয়া থাকলে এবার তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হয়নি। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগের কোনও পরামর্শ তারা পাননি বলে অভিযোগ করেন।

বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর তরমুজ থেকে ভালো লাভ করা যাবে বলে জানান তারা। চাষিরা আরও জানান, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সরকারের বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান থাকা তরমুজ চাষের জমি অনেকটই কমে গেছে।

সবুজ পাতার ফাঁকে ‘কৃষকের হাসি’ কাওয়ারচর গ্রামের চাষি হারুন হাওলাদার বলেন, এ বছর ২৭ কড়া জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। তবে ইতোমধ্যে জমি থেকে ৮০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।

লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকায় কৃষক মো. মনির হাওলাদার বলেন, ১৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। কঠোর পরিশ্রম করার পরে ক্ষেতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। পুরো জমির তরমুজ ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, কলাপাড়ার জমি তরমুজ আবাদে উপযোগী। এ কারণে ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের তরমুজ আবাদে আগ্রহ বাড়ছে। এবার তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রথম দিকে যারা তরমুজ চাষ করেছেন, তারা ভালো ফলন ও ভালো দাম পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে ডাকসু নির্বাচন কমিশনের বৈঠক
সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে ডাকসু নির্বাচন কমিশনের বৈঠক
এভিয়েশন সিকিউরিটির নতুন ইউনিফর্ম উদ্বোধন
এভিয়েশন সিকিউরিটির নতুন ইউনিফর্ম উদ্বোধন
এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য কেউ রক্ত দেয়নি: নাহিদ ইসলাম
এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য কেউ রক্ত দেয়নি: নাহিদ ইসলাম
সর্বাধিক পঠিত
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
প্রশাসনে থামছে না আন্দোলনঅন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট
আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট