বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের হলে ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে হলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়েছে। শনিবার বিকালে তদন্ত কমিটি গঠন ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। রবিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের উপাধ্যক্ষ নাজিমুল হক।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে কলেজের অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহাকে। বাকি তিন সদস্য হলেন সহযোগী অধ্যাপক প্রবীর কুমার সাহা, প্রভাষক অনিকা বিশ্বাস ও জহিরুল ইসলাম। তাদেরকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
উপাধ্যক্ষ নাজিমুল হক বলেন, ‘র্যাগিংয়ের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সোমবার থেকে তারা কাজ শুরু করবে। আশা করছি, তদন্তে আসল তথ্য বের হয়ে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় হলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এতে করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না কমিটির সদস্যদের।’
কলেজের হল সূত্র জানিয়েছে, বরিশালের এক আওয়ামী লীগ নেতার মদতে হলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে যারা ছিলেন তারা নিজেদের ছাত্রলীগ নেত্রী বলে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ জানার পর কলেজের অধ্যক্ষকে জানান, সেখানে ছাত্রলীগের কোনও কমিটি নেই। এরপর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি বাতিল করা হয়।
এর আগে ২৩ আগস্ট রাতে ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে তৃতীয় ব্যাচের এক ছাত্রীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ডেন্টাল ৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি সাধারণ সম্পাদক ফাহমিদা রওশন প্রভা, সহ-সম্পাদক ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নীলিমা হোসেন জুঁইয়ের নেতৃত্বে তাকে র্যাগিং করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। নির্যাতনের একপর্যায়ে ওই ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়লে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সুস্থ হয়ে শনিবার আবার হলে ফিরে আসেন তিনি।
এদিকে, র্যাগিংয়ের ঘটনা জানাজানি হলে শনিবার দুপুরে সাংবাদিকেরা সংবাদ সংগ্রহ করতে মেডিক্যাল কলেজে যান। ভুক্তভোগী ছাত্রীর বক্তব্য নেওয়ার সময় কলেজের দুই জন শিক্ষকের নেতৃত্বে ছয় জন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় একটি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার পর দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিক নেতারা আলোচনায় বসেন। সেখানে হামলাকারী দুই চিকিৎসক সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান।
কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ‘ভুল-বোঝাবুঝি থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছিল। উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: শেবাচিমে র্যাগিংয়ের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার ৬ সাংবাদিক