ঝালকাঠিতে পুলিশ কনস্টেবলের শটগান থেকে বের হওয়া গুলিতে আহত চা দোকানি মনির মাহমুদ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তিনি আর্থিক সংকটে রয়েছেন বলে জানা গেছে। রাজাপুর থানার তারাবুনিয়া বাজার এলাকায় গত শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১টায় ঘটনাটি ঘটলেও তা জানাজানি হয় বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বুধবার দুপুরে।
উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন চা দোকান বন্ধ থাকায় মনিরের চিকিৎসা ব্যয় সংকুলান করতে পারছে না তার পরিবার। এতে পরিবারটি মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ ঘটনায় কনস্টেবল নুরুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আহত মনির মাহমুদ রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামের রোলা এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। তিনি একই ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া বাজারে ছোট্ট একটি দোকানে চা-পান বিক্রি করে রোজগার করেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আহত মনির বলেন, ‘লেবুবুনিয়া বাজারে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় টহলে আসে রাজাপুর থানা পুলিশ। তখন আমি দোকানে চা বানাচ্ছিলাম। হঠাৎ কনস্টেবল নুরুল ইসলামের হাতে থাকা বন্দুক থেকে গুলি বের হয়ে আমার পায়ে লাগে। এতে পায়ের পাতা ঝাঁজরা হয়ে যায়। আহত অবস্থায় পুলিশের লোকেরাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
গুলিবিদ্ধ মনির বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় সার্জারি বিভাগের ২নং ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তার দোকান বন্ধ থাকায় অর্থ সংকটের কারণে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে বেগ পেতে হচ্ছে। মনিরের পরিবার অর্থ কষ্টে ভুগছে। তার পরিবারে খাবার নেই। বুধবার পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে তিন হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। যা প্রথম দিনেই শেষ হয়ে গেছে।
ঘটনার সময় সেখানে দায়িত্বরত রাজাপুর থানার এসআই আজাদ বলেন, ‘আমরা টহল দিতে লেবুবুনিয়া বাজারে যাই। সেখান থেকে অন্যত্র যাওয়ার উদ্দেশে অটোতে উঠতেছিলাম তখন হঠাৎ কনস্টেবল নুরুল ইসলামের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে একটি মিস ফায়ার হয়। এতেই মনির আহত হয়।’
রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘হাঁটার সময় মিস ফায়ার হয়ে কনস্টেবলের হাতিয়ার থেকে গুলি বের হয়েছে। তবে আহত ব্যক্তি মুমূর্ষু অবস্থায় নেই। তার চিকিৎসার খোঁজ আমরা (পুলিশ) নিচ্ছি। আর্থিক বিষয়টিও দেখছি।’
জেলা পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘ডিউটির সময় কনস্টেবলের শটগান থেকে অসাবধানতাবশত গুলিটি বের হয়েছে। আহত মনির মাহমুদের চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ রাখা হচ্ছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। এ ঘটনায় কনস্টেবল নুরুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে রাজপুর থানার ওসির সুপারিশে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’