ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য (ঝালকাঠি-১ আসন) শাহজাহান ওমরকে প্রধান আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। রাজাপুর থানায় করা এই মামলায় ৫৩ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করেছে।
উপজেলা বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ বেশকিছু অভিযোগ এনে শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) রাতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালুকদার আবুল কালাম আজাদ মামলাটি করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজাপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে শাহজাহান ওমর তার রাজাপুরের গ্রামের বাড়িতে আসার পথে রাজাপুরের উত্তর পিংড়ি এলাকায় তার বহনকারী গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। একইদিন তার বাড়িতেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এতে তিনি আহত হন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে কাঁঠালিয়া থানা বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও মারধরের মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শুক্রবার রাতে রাজাপুর থানায় হওয়া মামলার আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান প্রযুক্তি সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ জিলানী মিলন মাহমুদ (বাচ্চু মৃধা), রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জিয়া হায়দার খান লিটন, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাসান বাপ্পি মৃধা, কাঁঠালিয়া উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মিয়াজি, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) রাজাপুর শাখার চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা সুমন সিকদার, বড়ইয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন সুরু মিয়াসহ ৫৩ জন। এ ছাড়াও ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর বাইপাস মোড় এলাকায় রাজাপুর উপজেলা বিএনপির প্রধান কার্যালয় সংগঠনের কর্মী সমাবেশে উল্লেখিত আসামিরা লোহার রড, হকস্টিক, জিআই পাইপ, রামদা, চাইনীজ কুড়াল, ছ্যানা, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পার্টি অফিসের সামনে উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালুকদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, তখন দেশে এক দলীয় স্বৈরশাসন ব্যবস্থা থাকায় রাজাপুর থানায় মামলা করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান দেশে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ হওয়ায় এবং ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মামলা করেছি।
রাজাপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, এ মামলায় লাল মৃধা নামে একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগের যোগ দেন সে সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকা শাহজাহান ওমর। পরে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে এমপি হন।