ঝালকাঠি কারাগারের কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে মো. জুবায়ের হোসেন (৩৫) নামে ওই কারাবন্দিকে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো অবস্থায় হাজির করলে বিষয়টি বিচারকের দৃষ্টিগোচর করেন তার আইনজীবী।
এ ঘটনায় বিচারক মো. মনিরুজ্জামান আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে জেল কোড বিধি অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন আসামি জুবায়েরের আইনজীবী বনি আমিন বাকলাই।
মো. জুবায়ের হোসেন ঝালকাঠি শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। শহরের পূর্ব চাঁদকাটি এলাকার মাওলানা আবদুল কাদেরের ছেলে। তিনি জেলা বিএনপি অফিস পোড়ানোর মামলায় প্রায় দুই মাস ধরে কারাগারে আছেন।
এ বিষয় আদালত প্রাঙ্গণে জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন অজুহাতে আমার কাছে কারারক্ষীরা টাকা চেয়ে আসছিল। টাকা না দেওয়ায় গত ১৭ জানুয়ারি কারাগারের সুবেদার সোহাগ হোসেন, প্রধান কারারক্ষী আলাউদ্দিন মিয়া, কারারক্ষী ইদ্রিস মিয়া, গিয়াস উদ্দিন, শামীম হোসেন, নুরুল হক ও মুসা মিয়া আমাকে তিন দফায় সারা শরীরে বেধড়ক পিটিয়ে ফুলা-জখম করে ডান হাত ভেঙে দেয়।’
জুবায়েরের ভাই হুমায়ুন কবির বলেন, ‘উপর্যুপরি মারধরের পরেও আমার ভাইকে কোনও চিকিৎসা দেওয়া হয় নাই। পরে যখন জুবায়ের ব্যথায় কাতরাচ্ছিল তখন কারা কর্তৃপক্ষ তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা করায়। আমার ভাই এত অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তাকে কারাগারের হাসপাতালে রাখে নাই।’
আদালতে উপস্থিত নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক আসামি বলেন, ‘জুবায়েরকে কারারক্ষীরা খুব মেরেছে। এতে জুবায়ের ছাড়া অন্য কেউ আহত হয় নাই।’
জুবায়েরের আইনজীবী বনি আমিন বাকলাই বলেন, ‘বিষয়টি আদালতের বিচারকের নজরে আনলে তিনি জেল সুপারকে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদনের জন্য আদেশ দেন।’
এ বিষয়ে জেল সুপার আবদুল্লাহ ইবনে তোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, ‘কোনও কারারক্ষী জুবায়েরকে মারধর করে নাই। জুবায়ের ওয়ার্ডে খাবার নিয়ে কয়েদিদের সাথে তর্কবিতর্ক করলে নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে সে আহত হয়। সেই সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আমাদের এক কারারক্ষী আহত হয়। জুবায়ের বুধবার রাতে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’