X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

বাবাকে পেটানোর প্রতিশোধ নিতেই রকেট মেম্বারকে হত্যা করে হৃদয়!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৪৭আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৫১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাবা আরমান মিয়াকে পেটানোর ঘটনা সহ্য না হওয়ায় হামলাকারীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন ছেলে হৃদয় মিয়া। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার আবু বক্কর সিদ্দিক (রকেট)। গ্রেফতারের পর হৃদয়ের কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি হৃদয় মিয়াসহ ১১ জনকে ফরিদপুর জেলা সদর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) হৃদয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ মূহূর্তে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া অন্যরা হলো- সরাইল সদরের বেপারিপাড়ার আরমান মিয়া, সরাইল সদর ইউপি বর্তমান সদস্য মো. শাহ আলম মিয়া (শাহআলম মেম্বার), আজমান মিয়া, তার ছেলে ফরহাদ মিয়া ও রাশেদ মিয়া, আরমান মিয়ার ছেলে রিয়াদ মিয়া (হৃদয়ের ভাই), রমজান মিয়ার ছেলে আনার মিয়া, নাজু মিয়ার ছেলে ওসমান গণি রুপম, আজমান মিয়ার ছেলে জয়, কাছন মিয়ার ছেলে হৃদয়।
গ্রেফতারদের মধ্যে ফরহাদ মিয়া, আনার মিয়া ও ওসমান গণি আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এদিকে গ্রেফতার হওয়ার পর আরমান মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়ার কাছ থেকে পুলিশ এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। হৃদয় পুলিশকে বলেছে, আমার উচ্চতা ছয় ফুট তিন ইঞ্চি। আমার মতো এমন ছেলে থাকতে বাবাকে পেটানোর প্রতিশোধ নিতে পারবো না কেন? তবে আমি রকেট মেম্বারকে একেবারে মেরে ফেলতে চাইনি। পরিকল্পনা মতো যাদেরকে নিয়ে তার ওপর হামলা করেছি তাদের মধ্যে একজন দা দিয়ে কোপ দিলে তাকে আর বাঁচানো যায়নি।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া তিন জনই হৃদয়ের নির্দেশে হামলার কথা স্বীকার করেছেন।
এর আগে পুলিশ এই মামলায় নান্নু মিয়া, কাচু মিয়া, নিক্সন মিয়া, আকরাম মিয়া, আনোয়ার হোসেন ও হামীম মিয়া নামে ছয় জনকে গ্রেফতার করে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু জানান, সর্বশেষ গ্রেফতার হওয়া ১১ জনের মধ্যে হৃদয়সহ ছয়জন আদালতে জবানবন্দি দিবে বলে রাজি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত হৃদয়সহ তিন জন জবানবন্দি দেয়নি। ওই তিন জনসহ বাকি আট জনকে ১২ দিন করে রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে। জবানবন্দি দেওয়া মোট চার জনের জবানবন্দিতেই হৃদয়ের নির্দেশনা ও ছক অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, হৃদয়কে জিজ্ঞাসাবাদে হামলার কথা স্বীকার করেছে। তবে সে বলেছে, রকেট মেম্বারকে হত্যা করা হোক সেটা সে চায়নি। কয়েক মাস আগে রকেট মেম্বার লোকজন নিয়ে তার বাবাকে পেটালে সেটি সহ্য হয়নি তার।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের প্রাত বাজার এলাকায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে রকেট মেম্বারকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকেরা। এর আগে ২০০৩ সালে রকেট মেম্বারের শিশু পুত্র রক্সিকে (১০) হত্যা করে লাশ বস্তাভর্তি করে ফেলা হয়। এ মামলায় একজনের ফাঁসির আদেশ ও দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হলেও উচ্চ আদালতে আপিল করে রক্ষা পেয়ে যায় দণ্ডিতরা।

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কাবরেরার পদত্যাগ চেয়ে নিজেই অপসারিত শাহীন!
কাবরেরার পদত্যাগ চেয়ে নিজেই অপসারিত শাহীন!
‘ভবিষ্যতে আ.লীগ বলে কোনও দল থাকবে না’
‘ভবিষ্যতে আ.লীগ বলে কোনও দল থাকবে না’
ইরানি তেল বাণিজ্যে আবারও আঘাত যুক্তরাষ্ট্রের
ইরানি তেল বাণিজ্যে আবারও আঘাত যুক্তরাষ্ট্রের
ফুটবল খেলার সময় বজ্রাঘাতে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু
ফুটবল খেলার সময় বজ্রাঘাতে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড