X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ডিপোতে আগুন: তদন্ত শেষ করতে পারেনি ৬ কমিটির পাঁচটি

নাসির উদ্দিন রকি, চট্টগ্রাম
০৫ জুলাই ২০২২, ২১:৪৮আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২২, ২২:৩০

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে কাজ করছে ছয়টি কমিটি। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস এবং বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি কয়েক দিন আগে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে প্রতিবেদনে কী উল্লেখ করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। অন্যদিকে বাকি পাঁচটি কমিটির একটিও তদন্ত শেষ করতে পারেনি। ঘটনার এক মাস হয়ে গেলেও কবে তদন্ত শেষ হবে সে বিষয়েও কিছু বলছেন না সংশ্লিষ্টরা। 

ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষ থেকে ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারকে সদস্য সচিব করে গঠন করা কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে এক মাসেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি কমিটি। কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হবে এ বিষয়েও সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই জানাতে পারেননি এই কমিটির সদস্যরা।    

কমিটির সদস্য পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কমিটির তদন্তকাজ চলমান আছে। কবে নাগাদ শেষ হবে তা বলা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকাল চারটায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তদন্তের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’  

তিনি আরও বলেন, ‘বিএম কনটেইনার ডিপো গার্মেন্ট সামগ্রী ও পোলট্রি ফিড রাখার কথা বলে ছাড়পত্র নিয়েছিল। তাদের ছাড়পত্রের ধরন গ্রিন-বি। রাসায়নিক রাখার কথা আবেদনে উল্লেখ করেনি তারা। পরিদর্শনে দেখা গেছে, তারা ডিপোতে রাসায়নিকও রেখেছিল। তবে কী কী রাসায়নিক ডিপোতে রাখা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। রিপোর্ট পাওয়া গেলে এরপর এসব রাসায়নিকের নাম জানা যাবে।’

এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলম। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।

এ কমিটির সদস্য ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কমিটির তদন্তকাজ চলছে। কবে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে তা এখনও ঠিক করে বলা যাচ্ছে না। আশা করছি শিগগিরই তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।’

বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন বেসরকারি এই কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের টার্মিনাল ম্যানেজার কুদরত-ই-খুদা, নির্বাহী পরিচালক ও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনারকে নিয়ে গঠিত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে কী আছে তা আমার জানা নেই।’

এছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টমসের পক্ষ থেকে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার শফিউদ্দিন। এ কমিটিকেও সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। কমিটির কাজ চলমান বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটির প্রধান পরিচালক (প্রশিক্ষণ,পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম। কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আনিসুর রহমান। মোট সাত সদস্যের এই কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে এখনও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি। কবে জমা দেওয়া হবে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া ঘটনার পরদিন ৫ জুন রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ জানায়, তারাও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এই কোম্পানির মালিকানা স্মার্ট গ্রুপের। তাদের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটি কত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি। ঘটনা তদন্তে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত কমিটিকে সহায়তার অঙ্গীকারও করে স্মার্ট গ্রুপ। তবে ওই কমিটির প্রতিবেদনও এখন পর্যন্ত প্রকাশ হয়নি।

এরআগে, ৪ জুন রাত সাড়ে ৮টায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ জন। এরমধ্যে ১০ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী। নিহত ৫০ জনের মধ্যে ২১টি লাশের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি।  

 

/টিটি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের ১ বছর, এখনও ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন সুলতান মাহমুদ
বিএম ডিপো বিস্ফোরণে নেই কারও দায়: ছেলের জন্য এখনও কাঁদেন স্কুলশিক্ষক বাবা
বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণমালিকপক্ষের অবহেলা পেয়েছে ৬ সংস্থা, কিছুই পায়নি ডিবি
সর্বশেষ খবর
পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগপিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট