X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মায় বিলীনের পথে বলাশিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প

চাঁদপুর প্রতিনিধি
১৩ আগস্ট ২০২২, ১২:৩৯আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১৩:২৮

পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বলাশিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প। ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেখানে বসবাস করা ১০০ পরিবারের লোকজন অন্যত্র চলে গেছেন। বর্তমানে এই প্রকল্পে বসবাসযোগ্য একটি ঘরও নেই। ঘরের লোহার এঙ্গেলসহ অন্যান্য মালামাল বিক্রি হচ্ছে ভাঙারি হিসেবে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে নদী ভাঙন ও অসহায় ভূমিহীন পরিবারের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসতঘর দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। চাঁদপুর জেলার ১৩টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের শিলারচর গ্রামের বলাশিয়া আশ্রয়ন প্রকল্প। এ প্রকল্পে ২০টি ব্যারাকে ভূমিহীন ও আশ্রয়হীন ১০০টি পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়। তখন ব্যারাক থেকে নদীর দূরত্ব ছিল প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। তবে গত দুই  বছর ধরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসতবাড়ি পদ্মা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে। 

এরইমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮০টি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বাকি ২০টি ঘরও নদীতে বিলীনের পথে। অনেকে ঘরের টিনের চালা খুলে নিয়ে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ ঘরের লোহার এঙ্গেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করছেন। গত ৮ আগস্ট আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের কিছু মালামাল জব্দ করে ইউনিয়ন পরিষদে রেখেছে গ্রাম পুলিশ।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করা ১০০ পরিবারের লোকজন অন্যত্র চলে গেছেন

সম্প্রতি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কোনও পরিবার বসবাস করে না। যেসব পরিবারের বসতঘর বিলীন হয়েছে, তারা আশপাশের চরের বিভিন্নস্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত বেশ কয়েকজন জানান, বিভিন্ন সময়ে নদী ভাঙনের কারণে ঘর-বাড়ি হারিয়েছেন। এরপর এখানে এসে বর্তমান সরকারের কারণে আশ্রয় পেয়েছিলেন। কিন্তু নদী ভাঙন তাদের পিছু ছাড়ে না। ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে চাঁদপুর সদর উপজেলা থেকে রাজরাজেশ্বরও ইউনিয়নের নাম মুছে যাবে।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের তহশিলদার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নূরুল ইসলাম জানান, পদ্মা নদীর ভাঙনে বলাশিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পটি প্রায় ৯৫ শতাংশ বিলীন হয়ে গেছে। যেটুকু রয়েছে সেখান থেকে উপকারভোগীদের সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রকল্পটির অবস্থা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নির্মাণের পর প্রায় ১০০টি পরিবার বসবাস করতো। পদ্মা নদীর ভাঙনে একটু একটু করে ভাঙতে ভাঙতে এখন পুরোটা নদীর গর্ভে চলে গেছে। যেকোনও সময় পুরো ব্যারাক নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের কিছু মালামাল ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়েছে

তিনি আরও জানান, গত বছর থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পটি ভাঙনের কবলে পড়ে। ভাঙন শুরু হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর কয়েক মাস আগে থেকে আবারও ভাঙন শুরু হয়। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ না থাকায় পরে মৌখিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে যাদের ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র তারাই খুলে নিতে শুরু করেন। এরই মধ্যে কয়েক দিন আগে খবর আসে, কারা যেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের অবশিষ্ট ঘরের লোহার এঙ্গেল, দরজা ও জানালাসহ মালামাল খুলে নিয়ে যাচ্ছে। খবর পেয়ে সেগুলো জব্দ করার পর ভাঙারি ব্যবসায়ী জানান, ঘরের মালিকরা তার কাছে এগুলো বিক্রি করেছেন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্তি দায়িত্ব) ফাহমিদা হক বলেন, ‘নদী ভেঙে নিয়ে গেলে তো আমাদের কিছু করার থাকে না। এটি প্রাকৃতিক বিষয়। উপকারভোগীরা ঘর ছেড়ে অনেক আগেই চলে গেছেন। ঘরগুলো খালি ছিল। এখন তারা কোথায় আছেন তা ইউনিয়ন পরিষদ ও তহশিলদার দেখছেন। আর তারা যদি ইতোমধ্যে কোনও সম্পত্তির মালিক না হয়ে থাকে আমরা আবার তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো।’

ঘরের মালামালের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঘরের ২৫০ কেজি মালামাল জব্দ করে ইউনিয়ন পরিষদে রাখা আছে। জব্দ আছে। আগে যে টিনগুলো খোলা হয়েছে সেগুলো উপকারভোগীরা নিজেরাই নিয়েছেন। তারা সেগুলো বিক্রি করবে কী করবে না সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি।’

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
কোথাও যাতে ভোক্তাদের হয়রানি না হয়, নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
অসময়ে ভাঙছে ব্রহ্মপুত্রের পাড়, দুশ্চিন্তায় স্থানীয়রা
নদ থেকে অবৈধভাবে তোলা বালুতে পৌরসভার চত্বর তৈরি করছেন প্যানেল মেয়র
সর্বশেষ খবর
ডুবন্ত শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো আরেক শিশুরও
ডুবন্ত শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো আরেক শিশুরও
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ