কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃত আট জনের সন্ধান তিন দিনেও মেলেনি। পুলিশ ড্রোন ব্যবহার করে পাহাড়ে কয়েক দফায় অভিযান চালালেও কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। এতে অপহৃতদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীর মাঝে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার একটি পাহাড়ঘেঁষা খালে মাছ ধরতে গেলে অস্ত্রধারী একটি দল স্থানীয় এক কলেজছাত্রসহ আট তরুণ-যুবককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আট জনই এক গ্রামের এবং তারা পরস্পর আত্মীয়। অপহৃতদের মধ্যে আবছার উদ্দিন কক্সবাজার কলেজের শিক্ষার্থী। অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীদের স্বজনদের কাছে কল করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহরণের শিকার আট জন হলেন- আবছার উদ্দিন (২২), নুরুল মোস্তাফা (৩৪), করিমুল্লাহ (২০), নুর মোহাম্মদ (২৪), মোহাম্মদ উল্লাহ (৩৮), সেলিম উল্লাহ (৩২), রিদুওয়ান (১৮) ও নুরুল হক (৫২)।
অপহৃত করিম উল্লাহ ও নুরুল মোস্তফার বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘অপহরণকারীরা প্রথমে জন প্রতি তিন লাখের বেশি মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। কিন্তু এই টাকা পরিবারগুলোর পক্ষে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে আমার দুই ভাইকে মুক্তি দেওয়ার শর্ত হিসেবে জন প্রতি ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। এর পর থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আমরা ভীষণ ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে আছি। কোন সময় আবার কোনও অঘটন ঘটে কি-না তার জন্য দুশ্চিন্তায় আছি। আমাদের চোখে ঘুম নেই।’
বাহার ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, ‘আট জনকে অপহরণ করেছে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এখনও তাদের কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এর আগে ও বিভিন্ন সময় অপহরণের শিকার হয়েছে স্থানীয় লোকজন। কেউ কেউ মুক্তিপণ আদায় করে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসে।’
টেকনাফ থানার আওতাধীন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মশিউর রহমান বুধবার দুপুরে বলেন, ‘অপহরণের পর থেকে পুলিশ বিরতিহীনভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে। এখনও পাহাড়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাহাড়ে অভিযান ড্রোন ব্যবহার হলেও এখনও কেউ উদ্ধার হয়নি।’
এ ঘটনায় অপহৃত করিমুল্লাহর ভাই মোহাম্মদ হাবীব বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ওসি আবদুল হালিম।