X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
১৩ মার্চ ২০২৩, ১৮:২৮আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, ১৮:২৮

চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৩ মে) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে শুনানি শেষে বিচার শুরুর এ আদেশ দেন।

এ মামলায় কারাগারে থাকা আসামি বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিমকে আদালতে হাজির করা হয়। এ ছাড়া এ মামলায় জামিনে থাকা আসামি এহতেশামুল হক ভোলা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে অপর দুই আসামি কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা ও মো. খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু ঘটনার পর থেকে তারা নিখোঁজ।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আদালত শুনানি শেষে চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় সাত আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৯ এপ্রিল আদালত এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রেখেছেন। মিতু হত্যা মামলায় প্রধান আসামি বাবুল আক্তার। তার পরিকল্পনাতেই ভাড়াটে খুনিদের সহায়তায় মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল।

বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা বাবুল আক্তারকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলাম। আদালত শুনানি শেষে এ আবেদন নাকচ করে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা এডিসি প্রসিকিউশনের কক্ষে বাবুল আক্তারকে আইনজীবীদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেছি।

এর আগে গত ১০ অক্টোবর বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগপত্রে বাবুল আক্তারসহ সাত জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন— মো. কামরুল ইসলাম সিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ ওরফে ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু ও শাহজাহান।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, মিতু হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থ জোগানদাতা স্বামী বাবুল আক্তার নিজেই। কিলিং মিশনের প্রধান ছিলেন তার বিশ্বস্ত সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন আরেক সোর্স এহতেশামুল হক ভোলা। কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেন কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, খাইরুল ইসলাম কালু, শাহজাহান মিয়া, নুরুন্নবী ও রাশেদ।

এতে আরও বলা হয়, মিতুকে হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া ছয় জনের মধ্যে তিন জন আগে থেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন। মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মুসাসহ তিন জন। মোটরসাইকেলের চালকের আসনে ছিলেন মুসা, মাঝে নুরুন্নবী ও পেছনে ছিলেন ওয়াসিম। ওয়াসিমই মিতুকে গুলি করেন। দুটি গুলির মধ্যে একটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আরেকটি মিতুর শরীরে লাগে। এরপর নুরুন্নবী, রাশেদ ও কালু ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ সময় মিতুর সঙ্গে তার ছেলে আখতার মাহমুদ মাহির ছিল। তাকে ধরে রেখে হত্যার নির্দেশনা দেন মুসা।

হত্যায় অংশ নেওয়া নুরুন্নবী ও রাশেদ পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এই মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন চার জন। তারা হলেন— বাবুল আক্তার, মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন ও শাহজাহান মিয়া। এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা ও খাইরুল ইসলাম কালু। জামিনে আছেন অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক।

এদিকে, অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত গায়ত্রী অমর সিং নামে এক বিদেশি নারীর সঙ্গে বাবুল আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের কথা মিতু জেনে যান। এ কারণে বাবুল তার বিশ্বস্ত সোর্সদের দিয়ে তাকে হত্যা করিয়েছিলেন। ২০১৪-১৫ সালে বাবুল আক্তার মিশনে সুদান যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন বাসায় রেখে যান। ওই মোবাইল ফোনে গায়ত্রী ২৯টি মেসেজ পাঠান। মেসেজগুলো দেখে প্রেমের বিষয়ে জানেন মিতু। বাবুল আক্তার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কক্সবাজারে কর্মরত থাকাকালে ইউএনএইচসিআর-এর কর্মকর্তা গায়ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

এর মধ্যে ‘তালেবান’ ও ‘বেস্ট কিপ্ট সিক্রেট’ নামে দুটি বই বাবুলকে উপহার দেন গায়ত্রী। বইগুলোতে বাবুলের সঙ্গে তার সাক্ষাতের তারিখ ও স্থান লেখা ছিল। ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাবুল ও গায়ত্রীর প্রথম দেখা হয় বলে বইয়ে লেখা ছিল। মিতু এই সম্পর্কের বিষয়ে জেনে গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন বাবুল। নির্যাতনের বিষয়টি নিজের বাবাকেও জানিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলে মাহিরকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের কাছে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। এই ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। এরপর তদন্তের দায়িত্ব পায় নগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মিতু হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।

/এফআর/
সম্পর্কিত
নব্য জেএমবি’র সদস্য মিলনের দোষ স্বীকার
চট্টগ্রাম শ্রম আদালতে ঝুলছে দুই হাজার ৮৭ মামলা
স্থায়ী জামিন পেলেন ট্রান্সকমের তিন কর্মকর্তা
সর্বশেষ খবর
ঘরের মাঠে পিএসজিকে হারিয়ে এগিয়ে থাকলো ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালঘরের মাঠে পিএসজিকে হারিয়ে এগিয়ে থাকলো ডর্টমুন্ড
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শ্রমিকরাও অংশীদার হবে: এমপি কামাল
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শ্রমিকরাও অংশীদার হবে: এমপি কামাল
মোস্তাফিজের শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের হার
মোস্তাফিজের শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের হার
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!