X
বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩
১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

যুক্তরাষ্ট্র-ভারতসহ বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৫৭আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৫৭

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক বলে উল্লেখ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে গেছেন। জি-২০-এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছে ভারত। এই উপমহাদেশ থেকে আর কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি; শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছেন। ১০ সেপ্টেম্বর আসবেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী। কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সহযোগিতা ও বহুমাত্রিক সম্পর্কের প্রমাণ হচ্ছে, তাদের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা সংলাপ।’

শুক্রবার (০৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্টি মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ইসমাইল খান, ট্রাস্টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. মোরশেদ হোসেন ও অধ্যক্ষ অসীম বড়ুয়া।

স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গত ১৫ বছরে সরকারি-বেসরকারি বহু মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করেছে সরকার। দেশে প্রায় ১২ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। প্রতি ছয় হাজার মানুষের জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক। এসব ক্লিনিকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। এটি আশপাশের দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ কোথাও নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসব কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপিত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে বলেই স্বাধীনতার পর আমাদের গড় আয়ু যেখানে ছিল ৩৯ বছর; সেটি এখন ভারত-পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অতিরিক্ত মুনাফা লাভের চিন্তা আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থা এবং ডাক্তারদের ওপর আস্থাহীনতা তৈরি করছে; যা সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ড ভোগাচ্ছে। অনেক সময় শোনা যায়, রোগীকে আইসিইউতে নেওয়ার প্রয়োজন নেই, তবু নিয়ে রেখেছে। রোগী এমনিতেই মৃত্যুবরণ করবে, তবু লাইফ সাপোর্টে দিচ্ছে। এরকম অহরহ ঘটনা শুনতে পাই। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকা রাখতে পারে। এ ব্যাপারে সবার সদিচ্ছা প্রয়োজন।’

ডাক্তার এবং হাসপাতালের ওপর যাতে মানুষের আস্থা বাড়ে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশমুখী অনেক রোগীকে জিজ্ঞেস করেছি বেঙ্গালুরু, দিল্লি ও কলকাতাসহ বিভিন্ন রাজ্যে অনেক ঝামেলা পেরিয়ে কেন চিকিৎসার জন্য যান। তারা আমাকে বলেছেন, ‘দেশের ডাক্তাররা ভালো করে কথা বলেন না। যিনি ভালো ডাক্তার, তার সহকারীরা রোগী দেখেন, আর দুই-মিনিট কথা বলেন। বিদেশের ডাক্তাররা প্রয়োজনে রোগীর সঙ্গে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত কথা বলেন এবং ভালো পরামর্শ দেন। কাজেই এদিকে সবাইকে মনোযোগ দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ডাক্তাররা অনেক মেধাবী। একজন ডাক্তার যদি ভালো করে রোগী দেখেন, তিনি যে ব্যবস্থাপত্র দিতে পারেন, সেটি ইউরোপ-আমেরিকার চিকিৎসকরাও দিতে পারেন না। আমি ইউরোপে অনেকদিন ছিলাম, সেখানকার ডাক্তারদের তুলনায় আমাদের ডাক্তারদের আইকিউ অনেক বেশি। কিন্তু যত ভালো ছাত্রই হোক, মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা না দিলে যেমন ভালো হয় না, তেমনি মনোযোগ দিয়ে রোগী না দেখলে তো রোগী তো ভালো হবে না। প্রতি বছর মানুষ বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন। আমাদের ডাক্তাররা যদি আরেকটু মনোযোগ দিয়ে রোগী দেখতেন, তাহলে বিদেশে রোগীরা যেতেন না। যারা ডাক্তার হবেন কিংবা হয়েছেন, তারা যদি সিদ্ধান্ত নেন সপ্তাহে একদিন বিনামূল্যে রোগী দেখবেন, তাহলে দেশের বেশিরভাগ গরিব রোগীর সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু সেটি খুব কম ডাক্তারই করেন। এসব বিষয়ে গভীরে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। একজন দরিদ্র মানুষের পক্ষে অসুস্থ স্বজনকে হাসপাতালে ভর্তি করে টাকা পরিশোধ করা যে কত কষ্টের, তা আমাদের ভাবতে হবে। সেটি মাথায় রেখে যদি বিনামূল্যে সেবা দেওয়া যায়, তবেই হবে মানবতার সেবা। এই মা ও শিশু হাসপাতাল বিনামূল্যে গরিবদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করবে বলে আমি আশা রাখছি।’

ডেঙ্গুর বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্মুখেরা বলে ডেঙ্গু যেমন মারাত্মক, বিএনপি তার চেয়েও মারাত্মক। এডিস মশা কামড়ায় আর বিএনপি মানুষ পোড়ায়। অনেক ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর চেয়ে বিএনপি মারাত্মক। তারা এখন ডেঙ্গু নিয়েও অপপ্রচার শুরু করেছে। বিএনপির কথায় মনে হচ্ছে, এডিস মশার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। মশা আওয়ামী লীগ, বিএনপি চেনে না। আমাদের সরকার ও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং জনগণের সচেতনতায় আমরা ডেঙ্গুকে সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারবো, যেভাবে করোনাকে মোকাবেলা করেছি।’  

সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি দেশকে একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চাই। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবায় যুক্তদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

/এএম/
সম্পর্কিত
৩০টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, ৭ জানুয়ারি যথাসময়ে ভোট হবে: তথ্যমন্ত্রী
আমরা চাই বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসুক: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি আন্দোলনকে আউটসোর্সিং করেছে: তথ্যমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট পেলো যারা
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট পেলো যারা
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রতিমন্ত্রী ও তার ছেলে
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রতিমন্ত্রী ও তার ছেলে
৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, বেশি পদ স্বাস্থ্য ও শিক্ষায়
৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, বেশি পদ স্বাস্থ্য ও শিক্ষায়
ডিআরইউর সভাপতি শুক্কুর আলী, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন
ডিআরইউর সভাপতি শুক্কুর আলী, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন
সর্বাধিক পঠিত
সরিষা শাক খাওয়ার ১০ উপকারিতা
সরিষা শাক খাওয়ার ১০ উপকারিতা
উত্তরপত্র পরিবর্তন করে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে ফেল দেখানোর অভিযোগ
উত্তরপত্র পরিবর্তন করে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে ফেল দেখানোর অভিযোগ
সহকর্মীকে গোপনে বিয়ে, প্রথম স্ত্রীর মামলায় প্রভাষক কারাগারে
সহকর্মীকে গোপনে বিয়ে, প্রথম স্ত্রীর মামলায় প্রভাষক কারাগারে
পিটার হাস আচরণের সীমা মেনে চলবেন আশা করে সরকার: ওবায়দুল কাদের
পিটার হাস আচরণের সীমা মেনে চলবেন আশা করে সরকার: ওবায়দুল কাদের
‘ডাঙ্কি’র সঙ্গে লড়াই, ভীত নন ‘সালার’ নির্মাতা
‘ডাঙ্কি’র সঙ্গে লড়াই, ভীত নন ‘সালার’ নির্মাতা