তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি বলেছে অক্টোবরে নাকি ফাইনাল খেলা হবে, আমরাও ফাইনাল খেলার জন্য বসে আছি। কিন্তু ফাইনাল খেলার আগে বিএনপি দেখতে পাবে তাদের টিমে ১১জন নাই। আগামী কয়েক সপ্তাহে দেখতে পাবেন বিএনপির খেলোয়াড়রা টিম ছেড়ে অন্য দলে পালিয়ে গেছে। যে পথে তাদের নেতা শমসের মবিন ও তৈমুর আলম খন্দকার গেছেন, সেভাবে আরও অনেকেই পালানোর তালিকায় আছেন।’
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিএনপি কয় দিন গণমিছিল, কয় দিন অবস্থান, আবার কয় দিন হাঁটা, কয় দিন দৌড় কর্মসূচি, কয় দিন বসা কর্মসূচি দেয়। এখন বিএনপির বাকি আছে হামাগুড়ি কর্মসূচি দেওয়া। দেখার বিষয় বিএনপি কখন হামাগুড়ি কর্মসূচি দেয়। তারা কর্মসূচি দিয়ে বলেন সরকারের পতন ঘটাবে। সরকারের পতন ঘটাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে বিএনপি থেকে সবাই পালিয়ে যাচ্ছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি এখন পুরনো গাড়ির রূপ ধারণ করেছে। সেজন্য কর্মসূচি দিয়ে মূলত দলকে চাঙা রাখতে চান। গাড়ি যখন পুরনো হয়ে যায় তখন ঘন ঘন স্টার্ট দিয়ে চালু রাখতে হয়। নাহলে ব্যাটারি বসে যায়। মাঝেমধ্যে স্টার্ট না দিলে বিএনপির গাড়ি বসে যাচ্ছে, এজন্য মাঝেমধ্যে তারা হাঁটা, বসা, দৌড় কর্মসূচি দিয়ে দলকে চাঙা রাখার চেষ্টা করছে। আর ভবিষ্যতে হয়তো দেখতে পাবো বিএনপি হামাগুড়ি কর্মসূচি দিয়েছে। এই সমস্ত কর্মসূচি দিয়ে বিএনপিকে রক্ষা করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের ওপর বিএনপির কোনও ভরসা নেই, ধীরে ধীরে তাদের সমাবেশ ছোট হয়ে আসছে। এজন্য ঘন ঘন বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেই ভিসানীতি ঘোষণা করেছে তাতে বলা হয়েছে যারা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রতিপক্ষ হবে তারাই এই ভিসানীতির মধ্যে আসবে। এখন নির্বাচনে বাধা দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছে বিএনপি। বিএনপি বলছে নির্বাচন প্রতিহত করবে। তাহলে কারা এই ভিসানীতির আওতায় আসবে প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিসানীতিতে সরকার কিংবা আমাদের দল কোনও চাপ অনুভব করছি না। আমরা এটিকে স্বাগত জানাই। এটির পরিপ্রেক্ষিতে বরং বিএনপির ওপরই চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়েও তাদের কোনও লাভ হয় নাই। একটি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বিদেশি বন্ধুদের উদ্দেশে বলেন, ‘এই দেশ আমাদের, এদেশে নির্বাচন কীভাবে হবে সেটি আমরা ঠিক করবো, নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে। আমাদেরকে গণতন্ত্র কাউকে শেখাতে হবে না। আমরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা জানি। কীভাবে সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় সেটিও আমরা জানি। দেশে অবশ্যই আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। সেই নির্বাচনে ধসনামা বিজয়ের মাধ্যমে আবারও জননেত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকারপ্রধান হিসেবে শপথগ্রহণ করবেন।’
যুবলীগকে আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড শেখ হাসিনার অগ্রগামী বাহিনী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি রাঙ্গুনিয়ায় এখন গর্তের মধ্যে ঢুকে আছে। গর্তের ভেতর থেকে মাথা তুলে উঁকি দেয়। গর্ত থেকে যাতে বের হতে না পারে সেজন্য যুবলীগকে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। তারা করোনাসহ কোনও দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রাঙ্গুনিয়ার কারো পাশে দাঁড়ায়নি। ভোটের সময় ভাঁজওয়ালা পাঞ্জাবি পড়ে মাঠে নামবে শীতের পাখির মতো। গতবার ধানের শীষ বর্গা দিয়েছিল বলে রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির মহিলা নেত্রীরা ঝাড়ু মিছিল করেছিল। এবার কাকে দেয়, সেটিই দেখার বিষয়।’
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুছের সঞ্চালনায় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল ইসলাম, প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট প্রমুখ।